দেশের রাজনীতিতে ফের আলোচনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চিঠি। এবার ইসি পুনর্গঠন ও নির্বাচন প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা নিয়ে আলোচনার জন্য, রাষ্ট্রপতির সাক্ষাত চেয়ে চিঠি দিয়েছে জাতিসংঘ, যেখানে থাকবেন পশ্চিমা বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা। সংস্থার আবাসিক প্রতিনিধি রবার্ট ওয়াটকিনস এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। একটি সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠনসহ আরও বেশ কিছু বিষয় নিয়ে তারা আলোচনা করতে চান।
বাংলাদেশের রাজনীতির টানাপোড়েনে বিদেশিদের দূতিয়ালি নতুন কিছু নয়। বিশেষ করে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে মতপার্থক্য কমিয়ে আনতে নানা সময়ই দেখা গেছে তাদের তৎপরতা। সবশেষ জাতীয় নির্বাচনের আগে জাতিসংঘের বিশেষ দূত অস্কার ফার্নান্দেজ তারাঙ্কো ঢাকা সফর করেন বেশ কয়েকবার।
নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন নিয়ে এখন সরগরম রাজনীতির মাঠ। প্রায় সব রাজনৈতিক দলের সাথে সংলাপের পর সার্চ কমিটিও গঠন করেছেন রাষ্ট্রপতি। এরইমধ্যে যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, প্রধান বিরোধী শক্তি বিএনপি। এ অবস্থায় আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘিরে আবারো আগ্রহী হয়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। যার নেতৃত্বে জাতিসংঘ ও পশ্চিমা কয়েকটি দেশ। এজন্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সাথে সাক্ষাত চেয়ে চিঠি দিয়েছে জাতিসংঘ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংস্থাটির আবাসিক প্রতিনিধি রবার্ট ওয়াটকিনস। এক ই-মেইল বার্তায় তিনি জানান, রাষ্ট্রপতির সাথে সাক্ষাতের উদ্দেশ্য, বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কীভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করা।
রাষ্ট্রপতির সাথে আর কী কী নিয়ে আলোচনা হতে পারে তাও ঠিক করে রেখেছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। যার মধ্যে রয়েছে,
-একটি সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন তৈরি।
-আন্তর্জাতিক মহলে গ্রহণযোগ্য একটি কমিশন গঠন
-নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে অন্তভূর্ক্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ
-নির্বাচনরে আগে-পরে সহিংসতা রোধ
-নির্বাচন প্রক্রিয়া জনগণের সামনে স্পষ্ট করা
-পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও রাজনৈতিক চাপ মোকাবেলায় সক্ষম করা। যাতে জাতীয় নির্বাচনসহ স্থানীয় নির্বাচন সব দক্ষতার সাথে পরিচালনা করতে পারে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এ প্রস্তাব বিষয়ে সাবেক কূটনীতিক হুমায়ন কবির বলেন, বিশ্বায়নের যুগে যেকোনো দেশের নির্বাচন নিয়ে বিদেশিরা নিজেদের মতামত দিতেই পারেন। তবে তা মানা না মানা নির্ভর করবে সংশ্লিষ্ট দেশের ওপর। অতীতেও জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক নানা মহলের তৎপরতা বিফলে গেলেও, এই কূটনীতিক মনে করেন, ব্যর্থতা-সফলতার দায়ভার বাংলাদেশের ওপরই বর্তায়। তবে কবে নাগাদ রাষ্ট্রপতির সাথে দেখা করবেন সেবিষয়ে এখনো কিছু জানান নি রবার্ট ওয়াটকিনস। তারা মনে করে, এসব প্রক্রিয়া অবলম্বন না করলে, অতীতের মতো আবারও সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে, যা বাধাগ্রস্ত করবে উন্নয়নকে।
নিউজ ডেস্ক, বিডি টাইম্স নিউজ