আজ ১লা সেপ্টেম্বর ২০১৬ বৃহস্পতিবার বেলা ১১.০০ টায় রাজধানীর রমনা থানায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কর্তৃক প্রণীত Citizen Information Management System (CIMS) নামে একটি সফট্ওয়ার এর উদ্বোধন করলেন ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া।
ডিএমপি কশিনার আছাদুজ্জামান মিয়া অনুষ্ঠানে বলেন- CIMS সফট্ওয়ার সিস্টেমে সকল ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংরক্ষিত থাকবে। তাদের প্রত্যেকের জন্য একটি ইউনিক আইডি নম্বর হবে। বাসা বদল করে তিনি নগরীর যেখানেই বসবাস করেন না কেন তিনি সে আইডি নম্বরেই পরিচিত হবেন।
বিট পুলিশিং কার্যক্রমে নগরবাসীর আন্তরিক সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে ডিএমপি কশিনার বলেন- সম্মানিত নগরবাসী এ ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন এবং এ পর্যন্ত ১৮৭৮২৩০টি তথ্য ফরম সংগ্রহ করা হয়েছে যার মধ্যে আনুমানিক ১ কোটি লোকের ব্যক্তি পরিচিতিমূলক তথ্য আমাদের নিকট সংরক্ষিত আছে। এ সময় ডিএমপি কমিশনার বলেন-সংগৃহীত তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষা এবং তথ্য উপাত্ত অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকারে বৈজ্ঞানিক উপায়ে ব্যবহারের জন্য একটি সমন্বিত ডাটা বেইস করার জন্য প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল। তারই ধারাবাহিকতায় ডিএমপি Citizen Information Management System (CIMS) নামে একটি সফট্ওয়ার প্রণয়ন করেছে।
বিট পুলিশিং কার্যক্রমের সুফল বর্ণনা করে ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন-বিট পুলিশিং এর মাধ্যমে অপরাধ ও অপরাধীদের তথ্য সংগ্রহ জোরদার করা, এলাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, বসবাসকারীদের কৌশলগত অবস্থান এবং এলাকাবাসী সম্পর্কে তথ্য ভান্ডার সৃষ্টি করার ফলে অপরাধ প্রতিরোধ এবং প্রতিকারে পুুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। সংশ্লিষ্ট সফট্ওয়ার নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানকে ধন্যবাদ জানিয়ে আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন-এ সফট্ওয়ার তৈরী এবং প্রণয়নে সহযোগিতা করেছে স্বনামধন্য সফট্ওয়ার প্রতিষ্ঠান Thane System. অপরাধ দমনে নাগরিক দায়িত্ববোধ থেকে এগিয়ে আসার জন্য Thane System কর্তৃপক্ষকে আমরা ধন্যবাদ জানাই। এ সফট্ওয়ার প্রণয়নের মাধ্যমে সম্মানিত নাগরিকবৃন্দের ব্যক্তি পরিচিতিমূলক ডাটা বেইস প্রস্তুতের মধ্য দিয়ে নিরাপদ ঢাকা বাস্তবায়নে আমাদের প্রদত্ত অঙ্গিকার রক্ষার প্রক্রিয়া আরো বেগবান হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
বিট পুলিশিং কার্যক্রমের প্রেক্ষিত তুলে ধরে আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন-ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকাতে পুলিশের সেবাকে জনগণের নিকট পৌঁছে দেয়া, পুলিশের সেবার কার্যক্রমকে আরো গতিশীল ও কার্যকর করা এবং পুলিশের কাজে জনসম্পৃক্ততা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নভেম্বর ২০১৫ হতে ঢাকা মহানগরীতে বিট পুলিশিং প্রথা চালু হয়। কমিশনার বলেন-অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকারে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং জঙ্গি সন্ত্রাসীদের কার্যক্রম প্রতিরোধকল্পে বিট পুলিশিং প্রথার একটি অন্যতম পদক্ষেপ হিসেবে বাড়ী/স্থাপনা/প্রতিষ্ঠানের মালিক এবং ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। ভূয়া নাম ঠিকানা ব্যবহার করে বাড়ি ভাড়া নিয়ে অপরাধ সংগঠন করার প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন-বিভিন্ন গবেষনায় দেখা যায় অপরাধী ও জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা বাড়ীর মালিকের অজ্ঞাতে ভূয়া নাম ঠিকানা ও পেশা ব্যবহার করছে কিংবা নাম ঠিকানা অপ্রকাশিত রেখে এবং কোন চুক্তি না করে বাড়ী ভাড়া নিচ্ছে। এতে তারা নির্বিঘ্নে তাদের অপরাধ ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মাধ্যমে নিরীহ নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টিসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি করার সুযোগ পাচ্ছে।
এ সময় ডিএমপি কমিশার সাংবাদিকদের জ্ঞাতার্থে উল্লেখ করেন- এ ধারাবাহিকতায় গত ২৯/০২/২০১৬খ্রিঃ আমি সংবাদ সম্মেলনে নগরবাসীকে এ ব্যাপারে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলাম। এ বিষয়ে নগরবাসীর স্বত:স্ফুর্ত সাড়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন-এ প্রেক্ষাপটে বাড়ী/স্থাপনা/প্রতিষ্ঠানের মালিক এবং ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রম শুরু করা হয়। বিট অফিসারগণ তথ্য প্রদানের জন্য উঠান বৈঠক এবং ব্যক্তি পর্যায়ে যোগাযোগের মাধ্যমে সম্মানিত নাগরিকবৃন্দদের এ ব্যাপারে উৎসাহিত করছেন।
সম্মানিত নগরবাসীর দৃশ্যমান নিরাপত্তা ও নিরাপত্তাবোধ বৃদ্ধির দায়বদ্ধতার প্রতি আলোকপাত করে আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন-পুলিশই জনতা, জনতাই পুলিশ এ মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ হয়ে এবং জনবান্ধব পুলিশিং প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রণীত বিট পুলিশিং প্রথা সফলভাবে বাস্তবায়ন এবং পুলিশ ও জনতার সম্মিলিত উদ্যোগে অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকারের মাধ্যমে সমাজ থেকে পুলিশভীতি ও অপরাধভীতি দূর করে প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তাবোধ (Sence of Security) বৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জনে ডিএমপি বদ্ধপরিকর।