আম ও রেশমের নগরী হিসেবে পরিচিত রাজশাহী এবার নির্মল বায়ুর দিক থেকে সারাবিশ্বের শহরগুলোর মধ্যে সবার উপরে ঠাঁই করে নিয়েছে পদ্মা তীরবর্তী এই নগরী। সম্প্রতি বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা হু’র উপাত্তের ভিত্তিতে ব্রিটিশ প্রভাবশালী পত্রিকা দ্যা গার্ডিয়ান জানিয়েছে, বিশ্বের যে ১০টি শহরে গত দু’বছরে বাতাসে ভাসমান ক্ষুদ্র ধূলিকণা কমেছে, এরমধ্যে রাজশাহীতে এই হার সবচেয়ে বেশি।
বাতাসে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর ভাসমান কণা দ্রুত কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে বিশ্বে সবচে এগিয়ে রাজশাহী নগরী। জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু’র উপাত্তের ভিত্তিতে সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের দ্যা গার্ডিয়ান পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়। ইটভাটায় আধুনিক প্রযুক্তি, বনায়ন আর উন্নত ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণেই রাজশাহী পেয়েছে এ স্বীকৃতি। তবে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র বলছেন, প্রয়োজনীয় অর্থের বরাদ্দ না মিললে আগামীতে এ অর্জন ধরে রাখা হয়তো সম্ভব হবে না। ২০১৪ সালে এখানে দুই দশমিক ৫ মাইক্রোমিটার আকারের প্রতি ঘনমিটার বাতাসে ধূলিকণা ছিল ৭০ মাইক্রোগ্রাম। ২০১৬ সালে এটি নেমে এসেছে মাত্র ৩৭ মাইক্রোগ্রামে। পরিবেশবিদরা বলছেন, আধুনিক প্রযুক্তির ইটভাটা স্থাপন, পতিত জায়গায় বনায়নসহ বেশকিছু কার্যকর পদক্ষেপের কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। এতে গর্বিত নগরবাসী।
রাজশাহী পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. নূর আলম বলেন, ‘ইটভাটার চিমনীগুলোর উচ্চতা বাড়ানো হয়েছে। যেসব শিল্প কারখানায় ডাস্ট কালেক্টর ছিল না সেগুলোতে ডাস্ট কালেক্টর স্থাপন করা হয়েছে। তাছাড়া রাস্তার পাশে প্রচুর গাছ লাগানো হয়েছে। এবং আশেপাশের পতিত জায়গাতে প্রচুর বনায়ন করা হয়েছে।’ রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলমের মতে, রাত্রিকালীন বর্জ্য অপসারণ ও উন্নত ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ নানা উদ্যোগ নেয়ায় এ সাফল্য এসেছে। তবে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ না পেলে আগামীতে এই অর্জন ধরে রাখা সম্ভব হবে না বলে মনে করেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র নিজাম উল আজিম।
পরিবেশবান্ধব নগরী গড়তে ২০১১ সাল থেকে জিরো সয়েল প্রকল্প বাস্তবায়ন করে আসছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন। এ প্রকল্পের আওতায় ১০ কিলোমিটার সড়কদ্বীপ ছেয়ে দেয়া হয়েছে নানা প্রজাতির সবুজ গাছ গাছালীতে।