ইতিহাস গড়লো পর্তুগাল। ক্রিশ্টিয়ানো রোনালদো মাত্র ২৪ মিনিট খেললেও এডারের অতিরিক্ত সময়ের গোলে প্রথমবারের মত ইউরো জিতে নিলো পর্তুগাল। স্বাগতিক ফ্রান্স হারলো ১-০ গোলে। ঘরের মাটিতে ফরাসী সমর্থকদের কান্নায় ভাসিয়ে ইউরো শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা হাতে তুললো রোনালদোর পর্তুগাল। পুরো আসরে ৬ গোল করে গোল্ডেন বুট জিতেছেন অ্যান্তনিও গ্রিজম্যান।
বৈশ্বিক আসরে রোনালদোর সবথেকে পরিচিত দৃশ্য হয়তো সেই ২০০৪ এর কান্না। ভাগ্যদেবীর কি বিচার, এবারেও সেই রোনালদোর চোখে জল। আনন্দ অশ্রু। প্রথম ইউরো জেতার আনন্দ অশ্রু। পর্তুগালের প্রথম ইউরোর জন্য এই আনন্দ আর আবেগের নির্মম মিশেল। আগের দৃশ্যেও ছিল নয়নজলে রোনালদোর মাঠ থেকে প্রস্থান। প্রথমে দিমিত্রি পায়েত ও এরপরে এভরার ট্যাকলে হাঁটুতে আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয় সিআর সেভেনকে। পর্তুগিজ সমর্থকরাও হয়তো তখনই রূপকথার শেষ দৃশ্য দেখে ফেলেছিলেন। বিরস বিহ্বল বদনে চেয়েছিলো স্ট্রেচারে করে রোনালদোর বিদায়ের দিকে। তখনো যে চিত্রনাট্যের ঢের বাকি। বাকি দৃশ্যে পুরোটাতেই ফ্রান্সের জয়জয়কার। স্বাগতিক হবার পুরো দাপটই যেন মাঠের খেলায় প্রতিবিম্বিত। একের পর এক আক্রমণ একের পর এক শট পর্তুগিজ গোলমুখে।
আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা গ্রিজমান, কিংবা ফরাসী স্ট্রাইকার জিরু। ২৪ মিনিটে রোনালদোর পথ ছাড়ায়ও কিন্তু মুষড়ে পরেনি পর্তুগাল। হোয়াও মারিও, রেনাতো সানচেজ, লুই ন্যানিরাও চেষ্টা করেন। যদিও সংখ্যায় সেটা খুবই কম। নির্ধারিত নব্বই মিনিট পর পরিসংখ্যান ৫৬ ভাগ বল পায়ে ফ্রান্সের, পর্তুগালের ৪৬। ফ্রান্সের ৭ টি শট, পর্তুগিজ বারে। আর পর্তুগালের মাত্র একটি। পগবা, কোম্যানদের পায়ে বল ঘোরে ৭২৪ বার, আর সেলেকাওদের মাত্র ৫৭৭ বার। ১০৯ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে শট নিয়ে গোল দেন তিনি। সাইড লাইনে রোনালদোর চোখে আবারো সেই জল, তৃপ্তি স্বস্তির জল। উল্লাসে মাতে পুরো পর্তুগিজ শিবির।
সিংহভাগ সময় মাঠের বাইরে থেকেও যিনি ছিলেন আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। খেলার আনন্দ আর বেদনার সুরের সুরকার, সিনেমার শেষ দৃশ্যে তার হাতেই যেন ইউরোর ট্রফিটা সবচেয়ে মানানসই। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর হাতে সেই অধরা শিরোপা, পর্তুগালে যে শিরোপার অপেক্ষা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে। ফাইনালে হারের পর ফরাসি সমর্থকদের জন্য একটাই পাওয়া হয়ে রইলো। আর সেটি হলো আসরে সর্বোচ্চ ৬ গোল করা অ্যান্তনিও গ্রিজম্যানের গোল্ডেন বুট অর্জন।