ঢাকার হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলার ঘটনা বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রধান দুটি দলের পরস্পরকে দোষারোপের ফল বলে উল্লেখ করেছে ইতালির গণমাধ্যম। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর জনসংযোগ দফতর আইএসপিআর জানিয়েছে, হামলায় নিহতদের মধ্যে নয় জনই ইতালির নাগরিক। ইতালির গণমাধ্যম বিশেষ করে টেলিভিশনগুলোতে শুক্রবার রাত থেকে এখন পর্যন্ত বেশীরভাগ সংবাদ ও আলোচনা অনুষ্ঠানই ছিল ঢাকার এই সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে।
ইতালির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন রাই নিউজের সংবাদ বিশ্লেষণে এই হামলার জন্য বাংলাদেশের দুই প্রধান দলকে সরাসরি দায়ী করা হয়েছে। এতে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডসমূহের ধারাবাহিকতার উল্লেখ করে বলা হয়েছে, দোষারোপের রাজনীতিই গুলশানের এই হামলার রাস্তা তৈরি করে দিয়েছে। স্কাই নিউজের সংবাদ বিশ্লেষণেও একই রকম বক্তব্য এসেছে।
ইতালির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিহতদের পরিচয় জানিয়েছে। এরা হচ্ছেন, ক্রিশ্চিয়ান রসি, মার্কো টনডাট, নাদিয়া বেনেডেট্টি, আডেলে পাগলিসি, সিমোনা মন্টি, ক্লডিয়া মারিয়া ডি’অ্যান্টোনা, ভিনসেনযো ডি’অ্যালেস্ট্রো, মারিয়া রিভলি এবং ক্লডিও চ্যাপেল্লি। এদের মধ্যে তেত্রিশ বছর বয়েসী এক নারী গত দেড় বছর ধরে কর্মসূত্রে ঢাকায় রয়েছেন। বায়ান্ন বছর বয়সী অপর নারী টেক্সটাইল মিলে কাজ করতেন।নিহতদের মধ্যে সাতচল্লিশ বছর বয়স্ক একজন ব্যবসায়ী রয়েছেন। তিনি তিন বছর বয়সী জমজ সন্তানের পিতা। দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো অবশ্য একজন দশম ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছে বলে খবর দিচ্ছে।
ইতালির ভেনিসে বসবাসরত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সাংবাদিক পলাশ রহমান জানান, তিনি স্কাই নিউজের একটি আলোচনা অনুষ্ঠান দেখছিলেন, সেখানে বক্তারা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘একনায়ক’ এবং বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়াকে ‘ইসলামপন্থীদের নেতা’ হিসেবে বর্ণনা করছিলেন। গুলশান হামলার নিন্দা জানিয়ে ভেনিসের বাংলাদেশি সম্প্রদায় একটি প্রতিবাদ সমাবেশ আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে। এদিকে ফ্রান্সের বোর্দোতে ইউরো-২০১৬ টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে ম্যাচ শুরুর আগে ইতালির খেলোয়াড়রা কিছুক্ষণ নীরব থেকে নিহতদের স্মরণ করেন।তাদের হাতে কালো ফিতে বাঁধা ছিল। সূত্র: বিবিসি