তদন্তে ধীরগতি, ত্রুটিপূর্ণ চার্জশিট, আইনজীবী ও পুলিশের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে জঙ্গিরা জামিনে বের হয়ে যাচ্ছে বলে মনে করেন আইন বিশেষজ্ঞরা। বিষয়টি স্বীকার করেছেন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু।
রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জানান, জঙ্গিদের জামিন ঠেকাতে এবং তাদের বিচারে সর্বোচ্চ সতর্ক তারা। তবে তদন্ত মামলার অভিযোগপত্র দেয়ার ক্ষেত্রে পুলিশকে আরও সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন। গত বছরের ২৩ অক্টোবর হোসেনি দালানের শিয়া সম্প্রদায়ের তাজিয়া মিছিলে গ্রেনেড হামলায় ২ জন নিহত এবং দেড় শতাধিক আহত হয়। ঐ দিন রাতে ছুরিকাঘাতে নিহত নয় দারুস সালাম থানার এসআই ইব্রাহিম।পৃথক এ দুই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় ৯ জনকে।
সম্প্রতি এই ৯ জনই বিচারিক ও উচ্চ আদালত থেকে জামিনে বের হয়েছেন। আদালত তার জামিন আদেশে বলেছেন, পুলিশের রিপোর্টে এদের বিরুদ্ধে যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ না থাকায় তাদের জামিন দেয়া হলো। যদিও পুলিশের ভাষ্য এরা জেএমবির সক্রিয় সদস্য। তদন্তে ধীরগতি, ত্রুটিপূর্ণ চার্জশিটের কারণে জঙ্গিদের জামিনের দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করলেন ঢাকার মুখ্যমহানগর হাকিম আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর। আর অ্যাটর্নি জেনারেলের পরামর্শ, তদন্ত, মামলার অভিযোগপত্র দেয়ার ক্ষেত্রে পুলিশকে আরও সচেতন হতে হবে।
ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু বলেন, ‘ এজাহার ও চার্জশিট যদি ডিফেক্টিভ হয় সেখানে তো ফাঁকফোকর থেকেই যায়। এখানে আদালতের কিছু করার থাকে না।’ অন্যদিকে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বেলন, ‘চার্জশিট দেয়ার আগে আমাদের আইনজীবীদের সঙ্গে পুলিশের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখা উচিত। যাতে সেখানে কোন ভুল না থাকে।’ এছাড়া পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগ এবং রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে সমন্বয়হীনতারও জঙ্গিদের জামিন হওয়ার অন্যতম কারণ বলে মনে করেন আইন বিশেষজ্ঞরা।
আইন বিশেষজ্ঞ অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘এখানে হয়তো অদক্ষ প্রসিকিউটর আছে বা যে দক্ষ প্রসিকিউটর আছেন তিনি ঠিকভাবে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। আর কোর্টগুলোর মধ্যেও চরম সমন্বনহীনতা আছে।’ জঙ্গি ও স্পর্শকাতর মামলা পরিচালনায় অভিজ্ঞ আইনজীবী ও পুলিশের আইন শাখার সমন্বয়ে একটি প্যানেল গঠন করা গেলে জঙ্গিদের জামিন ঠেকানো ও বিচার ত্বরান্বিত করা সম্ভব বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।