রাবি প্রতিনিধিঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) তুচ্ছ ঘটনায়  ছাত্রলীগের সিনিয়র এক নেতাকে পিটিয়েছে দলের জুনিয়র নেতাকর্মীরা। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাবির শহীদ হবিবুর হলের সামনে এই ঘটনা ঘটে। এর পর থেকে ক্যাম্পাসে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।ঘটনার শিকার সাদেকুল ইসলাম আশিক চারুকলা অনুষদের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী । তিনি রাবি শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক এবং কর্মসূচি ও পরিকল্পনা বিষয়ক উপ-সম্পাদক সৌমত্র কর্মকার রানার অনুসারী।

অভিযুক্তরা হলেন- সহ-সম্পাদক সফিউর সাফি (ফারসি), হাসিবুল ইসলাম শান্ত (ইতিহাস), ইতিহাস বিভাগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন। তারা সবাই দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। এর মধ্যে সাফি রাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু এবং শান্ত সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার অনুসারী।ঘটনার পর  প্রতিশোধ নেয়ার জন্য কাজী লিংকন ও রানার গ্রুপ মোটরসাইকেল শোডাউন দিয়েছে ক্যাম্পাসে। ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে চারুকলা অনুষদ থেকে সাদিকুল ইসলাম আশিক এবং তার ছোট ভাই শ্যামল দেবনাথ মোটরসাইকেলে করে আসছিল। শহীদ হবিবুর হলের এর সামনের রাস্তা দিয়ে আসার সময় সাফির মোটরসাইকেল অতিক্রম করে আসে আশিক।

বিষয়টি সাফি ও তার সাথে থাকা কয়েকজনের পছন্দ না হওয়ায় হলের সামনে গিয়ে আশিকের গতিরোধ করে। একপর্যায়ে সাদেকুল ইসলাম আশিককে সাফি ও তার সাথে থাকা কয়েকজন মিলে মারতে শুরু করে। সেসময় রানার রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে আশিক পরিচয় দেয় এতে আরো বেশি চড়াও হয় এবং রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করে তারা।অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা সাফিউর সাফি দাবি করেন, তিনি হবিবুর হলের সামনে মোটরসাইকেলে বসেছিলেন। এসময় আশিক তাদের মোটরসাইকেলে ধাক্কা দিয়ে চলে যায়। পরে তাকে থামতে বললে, তিনি হবিবুর হলের সামনে দাঁড়ান।এসময় তার সঙ্গে থাকা শান্ত ও শাহাদাত তাকে (আশিক) সরি বলতে বললে; আশি তাদের সঙ্গে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। আশিককে কোনো প্রকার মারধর করা হয়নি বলেও দাবি করেন সাফি।

জানতে চাইলে রাবি ছাত্রলীগের কর্মসূচি ও পরিকল্পনা বিষয়ক উপ-সম্পাদক সৌমত্র কর্মকার রানা বলেন, ‘বর্তমান কমিটির জুনিয়র ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা প্রায় ঝামেলা সৃষ্টি করছে। এর আগেও সিনিয়র নেতাকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মারধরের অনেক অভিযোগ রয়েছে।’ কমিটিতে যারা বড় পদে আছেন, তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে একদল জুনিয়র নেতাকর্মী এ ধরনের অপকর্ম করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।তিনি বলেন, এ বিষয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যদি ব্যবস্থা গ্রহণ না করেন তবে আমরা যারা সিনিয়র নেতাকর্মী আছি; তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো। এর সুষ্ঠু মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কোনো কর্মকান্ড হতে দিবো না।

জানতে চাইলে রাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। তবে তাৎক্ষনিত কোনো সিন্ধান্ত নেওয়া হয়নি। সভাপতির সাথে এ বিষয়ে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর ভবিষ্যতে যেন এধরণের ঘটনা না ঘটে সেই বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে ‘ তবে সিনিয়র নেতাকর্মীদের প্রশ্রয়ে জুনিয়র নেতাকর্মীরা এমন আচরণ করছে বিষয়টি অস্বীকার করেন রুনু।

মেশকাত মিশু
রাবি নিউজ ডেস্ক ।। বিডি টাইম্‌স নিউজ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে