রাবি প্রতিনিধিঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে অপব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সভাপতি মানিক রাইহান বাপ্পীকে ফাঁসানোর চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করা হয়েছে এমন মিথ্যা অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করে মো. ওমর ফারুক নামের এক শিক্ষার্থী। ওই অভিযোগকারীর সদস্যপদ শৃঙ্খলা বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব থেকে বাতিল এরই কিছুদিন আগে । তবে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের দাবি ভুল বোঝাবুঝি থেকেই এই সংবাদ সম্মেলন। ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের উদ্ধর্তন নেতৃবৃন্দের নিকট নিজের অপরাধকে আড়াল রেখে প্রেসক্লাব সভাপতির বিরুদ্ধে মহান মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে বিভিন্ন আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগ দেয় উমর ফারুক। এতে রাবি মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড কোন ধরণের তথ্য যাচাই ছাড়াই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। একইদিন বিকেলে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি তারিকুল হাসানের সঙ্গে প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বললে আনীত অভিযোগটি সন্দেহ প্রবণ হয়। দু’দিন বিষয়টি পর্যালোচনা করে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডকে ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার করা হয়েছে বলে প্রমাণিত হওয়ায় তিনি নিজ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতি দেন।
বিবৃতিতে উল্লেখ্য করা হয় ‘গত ১৬ মার্চ তারিখে প্রেসক্লাব সভাপতির বিরুদ্ধে ক্লাব সদস্য উমর ফারুককে বহিস্কারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করি। তবে ওই দিন বিকেলে ক্লাবের সভাপতি ও সিনিয়র কয়েকজন সদস্যের সাথে সাক্ষাতে জানতে পারি ভুল বোঝাবুঝি থেকেই এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে এবং এ ঘটনায় একে অপরের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। উমর ফারুক আবারও প্রেসক্লাবে সংযুক্ত হতে ইচ্ছুক। আরও উল্লেখ করা হয়, রাবি প্রেসক্লাবের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের কোন ধরণের দ্বন্দ্ব নেই। আমরা আশা করছি ভ্রাতৃত্বের মধ্য দিয়ে উভয়ের সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হবে।’
এর আগে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ঔদ্যত্বপূর্ণ আচরণ ও প্রেসক্লাবের এক সিনিয়র সদস্যকে হুমকি দেওয়ার কার্যনির্বাহী কমিটির ১৩ সদস্যর মধ্যে ১১ সদস্য সভাপতি বরাবর আবেদন করেন। এরই প্রেক্ষিতে ক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় অধিকাংশ সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে তাকে স্থায়ী সদস্য পদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এর আগে একাধিক বার তাকে মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়েছিল। এদিকে পদ বাতিল হওয়ার পর থেকেই প্রেসক্লাব ও বর্তমান সভাপতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক অভিযোগ দেওয়া শুরু করে ওই সদস্য।
এদিকে তার সদস্য পদ ফিরে পেতে বর্তমান সভাপতি মানিক রাইহান বাপ্পী ও প্রেসক্লাবের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য বরাবরও মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ করে লিখিত আবেদন করে সে।রাবি মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড’র সভাপতি তারিকুল হাসান বলেন, “ভুল বোঝাবুঝির কারণে বর্তমান সভাপতির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছিলাম। একটি বিবৃতি দিয়েছি। বর্তমান সভাপতি এর সঙ্গে জড়িত নই বলে জানতে পেরেছি।”বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. লায়লা আরজুমান বানু বলেন, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি সাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তি পেয়েছি। সেখানে উভয়ের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি থেকে এমন সমস্য হয়েছিল বলে জানতে পেরেছি। দ্রুত বিষয়টি সমাধান করা উচিত।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সভাপতি মানিক রাইহান বাপ্পী বলেন, উমরকে ক্লাবের শৃঙ্খলা বিরোধী কার্যক্রমে জড়ানোর ফলে ১১ জন কার্যনির্বাহী সদস্যদের দাবির প্রেক্ষিতে তার স্থায়ী সদস্য পদ বাতিল করা হয়। এর আগে তাকে আমিসহ সিনিয়র সদস্যরা তাকে একাধিক বার সতর্ক করে। এরপরও সংশোধন না হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর থেকেই সে আমার বিরুদ্ধে নানান ধরণের মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধকে অপব্যবহার করে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। তার এহেন কর্মকান্ডের মধ্যে দিয়ে মহান মুক্তিযোদ্ধের সকল শহীদদের অপমানিত এবং মহান মুক্তিযোদ্ধের চেতনাকে ভুলণ্ঠিত করা হয়েছে। এদিকে এই ধরনের কর্মকাণ্ডের জন্য বহিস্কৃত ওই সদস্য’র বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি।
মেশকাত মিশু
রাবি নিউজ ডেস্ক ।। বিডি টাইম্স নিউজ