রাবি প্রতিনিধিঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সৈয়দ আমীর আলী হলের সাবেক আবাসিক শিক্ষার্থী ও রাকসু সাবেক ভিপি ফজলে হোসেন বাদশা অতীতের স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে বলেন, ১৯৬৯ এর গণ আন্দোলনে শিক্ষক ড. শামসুজ্জোহা, স্বাধীনতা বিরোধীদের হাতে ফারুক, হিমুসহ বহু ছাত্রদেরকে এই ক্যাম্পাসে জীবন দিতে হয়েছে। তাদের রক্তে লাল হয়ে আছে মতিহার ক্যাম্পাস। এক কথায় মতিহারের সবুজ চত্বর সবুজ ছিল না। এরপরও মতিহারে ঠিকমত রাজনীতি করতে পারলে বাংলাদেশে নেতৃত্ব দেবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। শনিবার রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সৈয়দ আমীর আলী হল প্রশাসনের আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
সাংসদ বলেন, ৭৫’র ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধু মৃত্যর পর স্তদ্ধ হয়েছিল বাংলাদেশ। পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিদের ওপর ক্যাম্পাসে নেমে এসেছিল জুলুম-অত্যাচার। আর চলছিল রাজাকারদের পূনর্বাসন। এমনকি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজাকার শিক্ষককে ভিসি বানানো হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে কারাবরণের শিকার হয়েছি। সংবর্ধিত রাজশাহী-৩ আসনের সাংসদ ও সাবেক শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আয়েন উদ্দিন বলেন, এই ক্যাম্পাসে স্বাধীনতা বিপক্ষের শক্তি কখন বাংলা ভাই, ইসলামী নাম ধারণ করে এই অঞ্চলকে ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিকে পদদলিত করার বার বার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছে। যার দৃঢ় পদক্ষেপে আমরা মাথা উচু করে দাঁড়িয়েছি। রাজনীতি করতে গেলে কখনো সুসময়, কখনো আবার দু:সময়ে পড়তে হয়। এটা মেনে নিয়েই ছাত্রলীগের রাজনীতি করার আহবান জানান।
তিনি বলেন, আমীর আলী হলে থেকে পড়ালেখা করেছি এখান থেকেই রাজনীতি করেছি। কিন্তু দু:খের বিষয় হচ্ছে ছাত্রত্ব থাকা সত্বেও হল ছাড়তে হয়েছে। এ কষ্টটা অনেক যন্ত্রনাদায়ক ছিল। শুধু তাই নয়, জীবন মরণ সন্ধিক্ষণে সাহসিকতা দেখিয়েছি। কিন্তু আজকে ২০১৯ সাল আর ২০০১ সালের মধ্যে প্রায় ১৮ বছরের প্রার্থক্য। এক সময় স্বাধীনতা বিপক্ষের শক্তি শাসনের নামে শোষণ করেছে এই ক্যাম্পাসে। সৈয়দ আমীর আলী হলের প্রাধ্যক্ষ ড. আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে সংবর্ধক বক্তার বক্তব্য উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহান বলেন, “সংবর্ধনা প্রাপ্তরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতি সন্তান। এদের দ্বারাই সোনার বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। পাশা- পাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা, ভাবমূর্তি আর্ন্তজাতিক পরিমন্ডলে ছড়িয়ে পড়বে। তারা মানুষের জন্য কাজ করবে। তাদের সংবর্ধিত করতে পেরে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গর্বিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ছাত্রলীগ নেতাদের উদ্দেশ্য ভিসি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ করে শুধু ক্যাম্পাসে নেতা হয়ে সীমাবদ্ধ থাকলেই হবে না। জাতীয় অঙ্গনে নেতৃত্ব দিতে হবে। স্বপ্ন দেখতে হবে। সেটাকে বাস্তবে রুপ দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা চালানোর আহবান জানান তিনি। বাংলাদেশ বেতার এর উপস্থাপক রুখসানা লাকী ও সৈয়দ আমীর আলী হলের সুপারভাইজার অনিক মাহমুদের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, বিশ্ববিদ্যালয় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনন্দ কুমার সাহা, অধ্যাপক চৌধুরি মো. জাকারিয়া, তমালতলা কারিগরী ও ডিগ্রী কলেজ অধ্যক্ষ পরিমল কুমার কুন্ড, নওগা এ্যাডভোকেট বার এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. সরদার সালাউদ্দিন মিন্টু, রংপুরের চতরা ডিগ্রী কলেজের উপাধ্যক্ষ উত্তম কুমার সাহা, রাজনীতিবিদ ও সমাজ সেবক জনাব প্রাণকৃষ্ণ রায়, মাওলানা ভাষানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-রেজিস্ট্রার প্রশাসন এ এন এম মুনীর হোসাইন মোল্লা।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু, কৃষি শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক শাকিল হোসেন, সৈয়দ আমীর আলী হলে সভাপতি নাজমুল ইসলাম সজল প্রমুখ।
মেশকাত মিশু
রাবি নিউজ ডেস্ক ।। বিডি টাইম্স নিউজ