আন্তর্জাতিক: অনলাইনে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮১ মিলিয়ন ডলার ডাকাতির ঘটনার তদন্তে প্রখ্যাত তদন্তকারী প্রতিষ্ঠান ফায়ার আইকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ফায়ার আইয়ের ম্যান্ডিয়ান্ট ফরেনসিক বিভাগের একটি দল ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে। বিশ্বস্তসূত্রের বরাতে মার্কিন সংবাদমাধ্যম রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।
রয়টার্সের ওই দুই সূত্র জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাইবার ডাকাতির তদন্তরত প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড ইনফরম্যাটিক্স তাদের দ্বারা সম্ভব হচ্ছে না বলে সিলিকন ভ্যালিভিত্তিক বৃহৎ তদন্তকারী প্রতিষ্ঠান ফায়ার আইকে সহযোগিতার জন্য নিয়ে এসেছে।
ওয়ার্ল্ড ইনফরম্যাটিক্সের ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া তথ্যমতে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী রাকেশ আস্থানা যিনি বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি চিফ ইনফরমেশন অফিসার। আস্থানা এই তদন্তের জন্য ম্যান্ডিয়ান্টকে নিয়োগ দিয়েছেন। এ বিষয়টি অনেক স্পর্শকাতর বলে রয়টার্সের ওই সূত্র নিজের নাম প্রকাশ করতে চাননি।
রয়টার্সের ওই সূত্রের একজন বাংলাদেশ ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। তিনি জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে হ্যাকাররা কিভাবে তথ্য চুরি করেছে তা তদন্তে সহযোগিতা করতে আগ্রহী মার্কিন সরকার। সূত্র জানায় এফবিআই এবং মার্কিন বিচার বিভাগ এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে গোপন তথ্য আদান-প্রদান করেছে।
এফবিআই ইউএস সিক্রেট সার্ভিস বিচার বিভাগ ও ইউএস ট্রেজারির ক্রাইমস এনফোর্সমেন্ট নেটওয়ার্কের প্রতিনিধিরা এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। গত মাসে এই সাইবার ডাকাতির ঘটনা ঘটলেও তা প্রকাশ্যে আসে গত সপ্তাহে ফিলিপাইনের একটি স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশের পর।
ফিলিপাইনের স্থানীয় পত্রিকা ইনকোয়ারার জানিয়েছে সুইফট মেসেজিং সিস্টেমে জালিয়াতির মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ সরানো হয় ফিলিপাইন ও শ্রীলঙ্কার ব্যাংকে। শ্রীলঙ্কার একটি ভুয়া এনজিওর অ্যাকাউন্টে ২০ মিলিয়ন ডলার পাঠানো হলেও বানান ভুল থাকায় তা আটকে যায়। আর ফেডারেল ব্যাংকের সন্দেহ তৈরি হওয়ায় হ্যাকাররা পরবর্তীতে আর অর্থ সরাতে সক্ষম হয়নি।
উল্লেখ্য হ্যাকাররা বাংলাদেশ ব্যাংকের সিস্টেম এবং সুইফট কোড নিয়ন্ত্রণে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের সিস্টেমে ৩০টি পেমেন্ট অ্যাডভাইজ পাঠায় ফিলিপাইনের স্থানীয় ব্যাংকে টাকা স্থানান্তরের জন্য। আর এটি একটি সয়ংক্রিয় ব্যবস্থা। এর মধ্যে ৫টি অ্যাডভাইজ অনার করে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক। আর এই পাঁচটি অ্যাডভাইজে মোট ১০ কোটি ডলার (১০০ মিলিয়ন) হ্যাকারদের হাতে চলে যায়।
এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় যাওয়া দুই কোটি ডলার মাঝপথে আটকে গেলেও ফিলিপাইনে নেওয়া ৮ কোটি ডলার ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে ওই অর্থ ক্যাসিনো হয়ে হংকংয়ে পাচার হয়ে যেতে পারে।
ছবি:১১
ট্রাম্পের উত্থানে নিজের দায় এড়ালেন ওবামা
এফএনএস আর্šÍজাতিক: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে রিপাবলিকান দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী ডোনাল্ড ট্রাম্পের উত্থানে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ভূমিকা রয়েছে বলে যে যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে তা নাকচ করে দিয়েছেন তিনি। বলেছেন আমাকে এ জন্য দায়ী না করে রিপাবলিকনা নেতাদের উচিত প্রেসিডেন্ট পদে দলের সম্ভাব্য প্রার্থী নির্বাচনে প্রাক-প্রাইমারিতে অংশ নিয়ে যারা তাকে (ট্রাম্পকে) ভোট দিচ্ছে তাদের জিজ্ঞেস করা। ক্ষমতার মেয়াদে আমি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ঐক্যবদ্ধ রাখার প্রাণান্ত চেষ্টা করেছি।
মার্কিন রাজনীতিতে নতুন বিভক্তির জন্য প্রশাসন দায়ী কি না জানতে চাইলে প্রেসিডেন্ট ওবামা এ মন্তব্য করেন। একইসঙ্গে রাজনৈতিক এ বিভক্তির মাথাচাড়া দিয়ে উঠার সুয়োগ করে নিতে পারার জন্য রিপাবলিকান দলের থিংকট্যাংক ও ডানপন্থি গণমাধ্যম দায়ী বলেও জানান প্রেসিডেন্ট ওবামা। তিনি বলেন রিপাবলিকার সমর্থিত অঞ্চলে এ ধারণা ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে যে যা কিছু আমি করেছি সবকিছুর বিরোধিতা করতে হবে। রাষ্ট্রের স্বার্থে সহযোগিতা কিংবা ছাড় দিয়ে যেসব উদ্যোগ আমি নিয়েছি সেসবই গাদ্দারি।
ওবামা বলেন রিপাবলিকান দলের প্রচারণায় এমন এক আবহ তৈরি করা হয়েছে যেখানে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো একজন মনোনয়নপ্রত্যাশী টিকে থাকতে পারে।
গত মঙ্গলবার তিন রাজ্যে অনুষ্ঠিত প্রাক-প্রাইমারি ভোটে জয় পেয়েছেন প্রেসিডেন্ট পদে রিপাবলিকান দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী ডোনাল্ড ট্রাম্প। জিতেই সব সমালোচনা পেছনে রেখে রিপাবলিকান দলের নেতাকর্মীদের তার পেছনে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ট্রাম্প।
প্রেসিডেন্ট ওবামা বলেন উগ্রপন্থি এ মনোভাবের বিরোধিতা না করে দলের শীর্ষ নেতারা এটাকে আলিঙ্গন করেছেন। মুসলমানদের আমেরিকায় আসা বন্ধের ঘোষণা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়লেও অভিবাসনসহ অনান্য ইস্যুতে প্রেসিডেন্ট পদে দলের প্রতিদ্বন্দ্বী মনোনয়নপ্রত্যাশী টেড ক্রুজ ও মারকো রুবিও’র মতো ট্রাম্প অভিন্ন নীতি অনুসরণ করছেন বলে মন্তব্য করেন বারাক ওবামা।
এদিকে নির্বাচনী সমাবেশে ট্রাম্পের বিরোধিতা করায় এক ব্যক্তিকে লাঞ্ছনার দায়ে তার এক সমর্থকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হচ্ছে। বুধবার উত্তর ক্যারোলিনায় এক নির্বাচনী সমাবেশে ট্রাম্পের সমালোচনা করায় ৭৮ বছর বয়েসী ওই ব্যক্তিকে আক্রমণ করে তার এক সমর্থক। এ ঘটনায় ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া জানান রিপাবলিকান দলের সিনিয়র সদস্য ও প্রতিদ্বন্দ্বী মনোনয়নপ্রত্যাশীরা।