ঝিনাইদহ জেলা জুড়ে যত্রতত্র নিয়ম নীতি ছাড়া গড়ে উঠেছে বেকারী কারখানা। উপজেলাতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে প্রায় ২ ডজন বেকারী কারখানা। অধিকাংশ বেকারী গুলোতে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বেকারী খাবার তৈরী হচ্ছে। উৎপাদিত খাদ্যের মান প্রনয়ন এবং গুণগতমান ও পরিমাপ নিশ্চিতকরণ কোনো ব্যবস্থা নেই। উৎপাদিত খাবারে দেশের মান নিয়ন্ত্রণকারী একমাত্র প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এ-টেস্টিং ইন্সটিটিউশন (বিএসটিআই) এর অনুমোদন সহ নেই উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখ।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ঝিনাইদহের ৬টি উপজেলার বিভিন্ন বাজারে কিংবা বাড়িতে গড়ে উঠেছে প্রায় শ’খানি বেকারী কারখানা। কারখানা গুলো নিয়ম নীতি না মেনে স্যাঁতস্যাঁতে নোংরা পরিবেশে ভেজাল ও নিন্মমানের উপকরণ দিয়ে অবাধে তৈরী করছে বেকারী খাবার। অভিযোগ রয়েছে বেকারী খাবার তৈরী করতে ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ, কেমিক্যাল ও নিন্মমানের পাম তেল ব্যবহার করা হচ্ছে।
শ্রমিকরা বিশেষ পোশাক ছাড়া খালি পায়ে খাবার তৈরী করছেন। নোংরা ও অপরিস্কার কড়াই গুলোতে আটা ময়দা প্রক্রিয়া জাত করা হচ্ছে। ডালডা দিয়ে তৈরী করা ক্রিম রাখা পাত্রগুলোতে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছি ভন ভন করছে। উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ন তারিখ ছাড়াই বাহারি মোড়কে বনরুটি, পাউরুটি, কেক, বিস্কুটসহ বিভিন্ন ধরনের বেকারী ফাস্টফুড খাবার উৎপাদন ও বাজারজাত করা হচ্ছে। অধিকাংশ বেকারি মালিকের বিরুদ্ধে বিকল্প বেকারি মোড়কে নিন্মমানের খাদ্য সামগ্রী উৎপাদন করে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে পণ্য বাজারজাত করার অভিযোগ রয়েছে।

উপজেলার বিভিন্ন চায়ের স্টলে গিয়ে দেখা যায়, একাধিক পলি প্যাকে ঝুঁলছে পাউরুটি, ক্রীমরোল, কেক, পেটিস, সিঙ্গাড়াসহ অন্যান্য বেকারী খাবার। মোড়কের গায়ে উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণ লেখা থাকলেও কত তারিখে উৎপাদন হয়েছে বা মেয়াদ কবে শেষ হবে তার কোনো উল্লেখ নেই। শহরের চাকলাপাড়া, আরাপপুর, হামদহ, পাগলাকানায় সহ শহরের বেশ কিছু এলাকায় এমন তথ্য উঠে আসে। এ সকল বেকারীতে বিভিন্ন সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা সহ জরিমানা আদায় করা হলেও, চোর না শোনে ধর্মের কাহিনী। কিছু দিন যেতে না যেতেই ফিরে যাচ্ছে পূর্বে অবস্থায়।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ভেজাল কেমিক্যাল ও নিন্মমানের উপকরণ দিয়ে তৈরী করা এসব খাবার স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্বক ঝুঁকি। কয়েক জন বেকারী শ্রমিক জানান, দিনের বেলায় তারা কোনো পণ্য উৎপাদন করেন না। ফজরের আগেই পণ্য উৎপাদন শেষ হয়ে যায়। রাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও পুলিশের ঝাঁমেলা কম বলেই পণ্য উৎপাদন রাতেই শেষ করা হয়। তারা আরও বলেন মাঝে মধ্যে স্যানিটারি কর্মকর্তা এসে ঘুরে চলে যায়।উৎপাদনের তারিখ দেখার সময় নাই। ক্রেতারা তো আর এসব জিজ্ঞেস করে না। ঝিনাইদহের ৬টি উপজেলার বিভিন্ন বাজারে ও গ্রাম এলাকায় এখন বেকারী কারখানা তৈরি করা হয়েছে যত্রতত্র ভাবে। কিন্তু এত নিম্নমানের খাবার তৈরি করা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নেক নজরে নিচ্ছেনা।

জাহিদুর রহমান তারিক,
ঝিনাইদহ নিউজ ডেস্ক ।। বিডি টাইম্‌স নিউজ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে