কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের শিক্ষার্থী সোহাগী জাহান তনু হত্যার ঘটনায় ডিএনএ টেস্টে ধর্ষণের আলামত পাওয়ার পর দোষীদের দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছে পরিবার। এদিকে, হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার পেতে দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে শঙ্কিত সহপাঠীরা। তবে, রাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চাইলে তনু হত্যার বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী।

ডিএনএ পরীক্ষায়, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনুকে ধর্ষণের আলামত মিলেছে- সোমবার রাতে গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করে সিআইডি। দেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয় তনুর পরিহিত কাপড়ে পাওয়া ডিএনএ প্রোফাইলের মধ্যে একটি তনু’র এবং বাকীগুলো অন্যদের। এ কারণে, তনুকে ধর্ষণ ও হত্যায় তিনজন সম্পৃক্ত থাকার কথা নিশ্চিত হয়েছে সিআইডি।

প্রথম ময়নাতদন্তের রিপোর্টে কোনো আলামত না মিললেও, ডিএনএ পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পাওয়ার খবরে তনু হত্যার বিচার নিয়ে আশার আলো দেখছেন স্বজনরা। এদিকে, জড়িতদের সনাক্ত এবং বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন সহপাঠীরা। তবে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক জানিয়েছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চাইলে তনু হত্যার বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে করা হবে।

আনিসুল হক বলেন, ‘এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ মামলা। এটা জনগণের মনকে যথেষ্ট বিচলিত করেছে। জনগণ এটার একটা সুষ্ঠু বিচার চান। এসব পরিপ্রেক্ষিত বিচার করে যদি মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে কোনোভাবে পাঠানো যায়, তবে নিশ্চয়ই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটা বিবেচনা করবে।’

২০ মার্চ রাতে কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকা থেকে ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনুর লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পরদিন অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের বাবা। আদালতের নির্দেশে অধিকতর তদন্তের জন্য গত ৩০ মার্চ কবর থেকে তনুর লাশ উত্তোলন করা হয়। পরে পহেলা এপ্রিল মামলাটি সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়।

দোষীদের দ্রুত বিচারের দাবি পরিবারের

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের শিক্ষার্থী সোহাগী জাহান তনু হত্যার ঘটনায় ডিএনএ টেস্টে ধর্ষণের আলামত পাওয়ার পর দোষীদের দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছে পরিবার। ডিএনএ টেস্টের রিপোর্ট জানার পর সকালে পরিবারের সদস্যরা এ দাবি জানান। এর আগে গতরাত সোয়া ১০টার দিকে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আব্দুল কাহার আকন্দ  মুঠোফোনে ধর্ষণের আলামত পাওয়ার বিষয়টি সময় সংবাদকে নিশ্চিত করেন। তনুর পরিহিত কাপড়ে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে বলে জানান পুলিশ সুপার। তনুকে তিনজন ধর্ষণ করেছে এমনটিও ডিএনএ পরীক্ষায় আলামত পাওয়া গেছে।

চলতি বছরের ২০ মার্চ কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরে ওলিপুর এলাকায় একটি জঙ্গল থেকে তনুর লাশ উদ্ধার করা হয়। পরদিন তনুর পরিবার কুমিল্লা কোতয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২৭ মার্চ অধিকতর তদন্তের জন্য আবেদন করে ডিবি পুলিশ। পরে ৩০ মার্চ আদালতের নির্দেশে কবর থেকে লাশ তুলে দ্বিতীয় দফায় ময়না তদন্তের জন্য আলামত সংগ্রহ করা হয়।

এদিকে ময়নাতদন্তের দ্বিতীয় রিপোর্টের খবর শোনার পর তনুর পরিবার ও তনু মঞ্চ আশা প্রকাশ করছে, এভাবেই প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে