প্রধানমন্ত্রী আজ বৃহস্পতিবার সংসদে দশম সংসদের দশম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে এসব কথা বলেন বলে বার্তা সংস্থা বাসসের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকাকালে এ দেশ জঙ্গি সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য ছিল। দুর্নীতি, সন্ত্রাস, হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্রই হচ্ছে বিএনপির রাজনীতির মূলমন্ত্র। ঘুষ-দুর্নীতিতে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া ও তাঁর দুই ছেলে চ্যাম্পিয়ন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল এবং মানুষকে শোষণ করাই ছিল বিএনপি আমলের চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এ দেশে কোনো জঙ্গি সন্ত্রাসের স্থান নেই। এ দেশের মাটি ব্যবহার করে কাউকে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতে দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, ‘অনেকে জঙ্গি সন্ত্রাসের ধোঁয়া তুলে এ দেশকে নিয়ে খেলার চেষ্টা করবে। কিন্তু আমি বেঁচে থাকতে এ দেশকে নিয়ে কাউকে খেলতে দেব না।’ এ সময় প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘বিএনপি নেত্রী জয় সম্পর্কে সম্প্রতি একটি মিথ্যা অভিযোগ এনেছেন। জয় এ বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করেছে। বিএনপি নেত্রীকে আমি সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি এবং শেখ রেহানা আমাদের সন্তানদের উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করিয়েছি। চোর-চোট্টা বানাইনি। ২১ আগস্ট আমাকে হত্যায় ব্যর্থ হয়ে এখন আমার ছেলেকে হত্যার ষড়যন্ত্র হচ্ছে।’ ‘রাজনীতি জনগণের কল্যাণে এবং জনগণের জন্য। দেশের মানুষের কল্যাণে ১৯৯৬-২০০১ এবং ২০০৮ সালের পর ক্ষমতায় এসে অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। রিজার্ভ ২৯ বিলিয়নে উন্নীত হয়েছে। প্রবৃদ্ধি ৭ ভাগের উপরে অর্জিত হয়েছে। দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখা হয়েছে। মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬১-এ নেমে এসেছে। জনগণের মাথাপিছু আয় এক হাজার ৪৪৬ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। পাঁচ কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমা থেকে উঠে এসে নিম্ন মধ্য আয়ে পৌঁছেছে। সাত বছরে ৩০ লাখ ৭৫ হাজার ৭০৮ জনের বিদেশে কর্মসংস্থান হয়েছে। দেশে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। রপ্তানি আয় বেড়ে ৩২ দশমিক ২ ডলারে উন্নীত হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, দেশের মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে ১৬ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাধ্যমে ৩০ ধরনের ওষুধ বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে। ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এতে মা ও শিশু মৃত্যু হার কমেছে। গণমুখী স্বাস্থ্য নীতি প্রণয়নের মাধ্যমে মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে শিক্ষার হার ৭১ ভাগে উন্নীত হয়েছে। মানুষের দোরগোড়ায় শিক্ষা পৌঁছে দিতে বিনামূল্যে বই বিতরণ করা হচ্ছে। প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত মেধাবৃত্তি ও উপবৃত্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ১০৪টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে ১৪ হাজার ৭শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা আমরা অর্জন করেছি। দেশের ৭৬ ভাগ মানুষ এখন বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে।
