পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক বলেছেন, ‘বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় সামাজিক মিডিয়া জঙ্গি তৈরি করছে। দেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হিজবুত তাহরীর তৈরি হচ্ছে।’  আজ সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগের চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কে এম শহীদুল হক এ কথা বলেন।

এ কে এম শহীদুল হক বলেন, ‘আমাদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য থেকে যারা বিচ্ছিন্ন হয় তারা এভাবে বিপথে চলে যাচ্ছে । সামাজিক ফ্যাক্টরগুলোকে নিয়ন্ত্রণের জন্য রেগুলেটিভ বডি দরকার। সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করার অভাবেই সমাজিক বিপর্যয় ঘটছে।’

পুলিশের মহাপরিদর্শক বলেন, ‘যারা ব্লগে লিখে তাদেরকে আমরা সমর্থন করি, উৎসাহ দেই। কারণ সেখানে জ্ঞানের চর্চা হয়, সম্প্রসারণ হয়। কিন্তু সে জ্ঞানের চর্চা করতে গিয়ে যদি এমন কিছু লেখা হয় যা মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে তাহলে সেটা ফৌজদারি অপরাধ। সেখানে আইন আছে, মামলা হবে এবং গ্রেপ্তার হবে। যারা আবার ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার পর তাদের হত্যা করে সেটাও এ দেশের আইন সমর্থন করে না।’

শহীদুল হক বলেন, ‘এবারের বর্ষবরণ আমাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। একটু আশঙ্কা ছিল। সেভাবে আমরা নিরাপত্তা আয়োজন করেছিলাম। কিন্তু আল্লাহর রহমতে সেটা কাটিয়ে উঠেছি।’
পুলিশ প্রধান বলেন, ‘বর্তমানে যেসব সামাজিক অপরাধ ঘটছে সেসব নিয়ে গবেষণা করা দরকার। যেসব অপরাধ মানুষকে ভাবিয়ে তুলছে এগুলো নিয়ে যদি গবেষণা, সেমিনার হয় এবং সেগুলো যদি পুলিশের সঙ্গে শেয়ার করা হয় তাহলে আমাদের জন্য অনেক উপকার হবে।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, ক্রিমিনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জিয়া রহমান, নৃত্যশিল্পী লুবনা মরিয়ম, ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম, সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল প্রমুখ।

‘এমনিতেই গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ’
জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি ইঙ্গিত করে শহীদুল হক বলেন, ‘একজন গণ্যমান্য ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করার পর সবাই যা তা বলা শুরু করেছে। কোনো কিছু ঠিকমতো না জেনেই সবাই ফাইনাল রিপোর্ট দিয়ে দিয়েছে। কিন্তু ওই লোক কী, তাকে কেন আটক করা হয়েছে, তার ব্যাপারে সব তথ্য পুলিশের কাছেই আছে। তাকে তো এমনিতেই গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ।’

এদিকে অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শহীদুল হক জানান, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও তথ্যের ভিত্তিতেই সাংবাদিক শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ও দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়েছে। আসামি গ্রেপ্তারের সময় পুলিশ বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে বলেও জানান তিনি।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, ‘মূল আসামি জাসাসের সহসভাপতি আমেরিকায় এফবিআইয়ের কাছে যে বক্তব্য দিয়েছে, সে বক্তব্যের আলোকেই এদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
শহীদুল হক আরো বলেন, ‘আমরা অনেক সময় হকার সাজি, অনেক সময় ভিক্ষুক সাজি গ্রেপ্তারের জন্য, অপরাধীদের বের করার জন্য বিভিন্ন কৌশল করা হয়।’ তিনি আরো বলেন, ডিবির যে দল যায়, তাদের গায়ে কিন্তু ডিবির জ্যাকেট পরা ছিল।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে