রাবি প্রতিবেদকঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ‘ইয়ুথ সার্কেল’ ও ‘গােল্ড বাংলাদশে’র আয়ােজেন দুই দিনব্যাপী বিতর্ক উৎসব শেষ হয়েছে । বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন’স কমপ্লেক্সের সম্মলন কক্ষে উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. লায়লা আরজুমান বানু, সেন্টার ফর কমিউনিকেশন অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট (সিসিডি) বাংলাদশের যুগ্ম-পরিচালক শাহানা পারভীন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গ্রুপ অব লিবারেল ডিবেটার’স  (গোল্ড) বাংলাদেশ এর পরিচালক  ড. সাদিকুল আরেফিন মাতিন।
 ফাইনাল পর্বে বিতর্কের বিষয় ছিল “পারিবারিক মূল্যবোধের অভাব যুব সমাজকে জঙ্গীবাদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে”। বিতর্ক সংসদীয় পদ্ধতিতে হওয়ায় স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী-অধ্যাপক মামুন আব্দুল কাইয়ুম।
অনুষ্ঠানে উপ-উপাচার্য তার বক্তব্যে বলেন,”বিতর্কের মাধ্যমে সত্যকে যেমনি প্রতিষ্ঠা করা যায় মিথ্যাকেও প্রতিষ্ঠা করা যায়। তাই বাস্তব জীবনে  কিন্তু সত্য সব সময়ই সুন্দর। জঙ্গীবাদ অনেক গুলো ফ্যাক্টররের উপর নির্ভর করে। শুধু পরিবার এর জন্য দায়ী না পরিবার, সমাজ, বন্ধু সব কিছুর ভূমিকা এর পিছনে থাকতে পারে। আফগানিস্তানে রাশিয়ান আগ্রাসন কে টেকাতে আমেরিকা কোটি কোটি ডলার বিনিয়োগ করে জংগীবাদ কে সৃষ্টি করেছিল। ভালো মানুষ হতে চাইলে শুধু সার্টিফিকেট নিলে হবে না। ভালো মানুষ হতে হবে সব কিছুর সমন্বয়ে। জংগীবাদ কে টেকাতে পরিবার,সমাজ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পাঠ্যবই সব কিছুর সমন্বিত প্রচেষ্টা করতে হবে। আজ সুবচন নির্বাসনে। আমি মনে করি স্কুল কলেজে কিছু বই দিতে হবে যা না পড়লে মেট্রিক পাশ করা যাবে না।”
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিকা সুলতানার সঞ্চালনায় এসময় ছাত্র উপদেষ্টা ড. লায়লা আরজুমান বানু বলেন, “পারিবারিক মূল্যবোধই জঙ্গীবাদ থেকে তরুণ সমাজ কে দূরে রাখতে পারে। কারণ আমরা যতই বড় হই না কেন পারিবার থেকে আমরা যে শিক্ষা পাই বা যে মূল্যবোধের মধ্য দিয়ে বড় হই সেটা আমরা সারাজীবন লালন করি।”সিসিডি বাংলাদেশের যুগ্ম পরিচালক শাহানা পারবিন বলেন, জঙ্গীবাদ নির্মূলসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টিতে সিসিডি বাংলাদেশ ১৯৯৯ সাল থেকে কাজ করে যাচ্ছে। বিতর্ক এক্ষেত্রে একটি ভালো উপায় হতে পারে। যুব সমাজকে এধরণের অবক্ষয় থেকে বাঁচাতে সুস্থসংস্কৃতির চর্চা বাড়াতে হবে।
বুধবার সকালে দু’দিন ব্যাপী এ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহান।  ঐদিন  দুপুর আড়াইটা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত  বিতার্কিক দলসমূহের অংশগ্রহণে উৎসবের প্রথম রাউন্ড অনুষ্ঠিত হয়।বিতর্ক অনুষ্ঠানটির সার্বিক সহযাগিতায় করেছে ‘ডেমােক্রেসি ইটারন্যাশনাল বাংলাদেশ’ ও ‘সিসিডি বাংলাদেশ’। উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে শান্তি ও সহনশীলনতার পরিবেশ রক্ষায় ধর্মীয় উগ্রবাদ নির্মুলে বিভিন্ন সচেতনেতামূলক কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবেই মূলত এ বিতর্ক প্রতিযোগীতা । যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ১৬টি দল অংশগ্রহণ করেছে। বুধবার দেয়া এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন সিসিডি বাংলাদশের প্রজেক্ট কাে-অর্ডিনেটর হাসান তানভীর।বিতর্কের সমাপনী পর্বে বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মামুন আব্দুল কাইয়ুম, ফোকলোর বিভাগের অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম কনক, ফোকলোর বিভাগের অধ্যাপক ড. হাবিবুর রহমান, ইতিহাস  বিভাগের অধ্যাপক হেলাল উদ্দীন।
ডেমােক্রেসি ইটারন্যাশনাল বাংলাদেশের অর্থায়নে ‘তরুণদের উগ্রবাদী চরমপন্থি ও ধর্মীয় জঙ্গিবাদ বিজরিত হওয়া’ শীর্ষক পাইলট প্রকল্পের আওতায় মহানগরীর অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে এ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে  রাজশাহী কলজ, বরেদ্র বিশ্ববিদ্যালয় ও নর্থ বঙ্গল ইটারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি’র শিক্ষার্থীদের মাঝে উগ্র ও জঙ্গিবাদবিরাধী বিভিন্ন সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। চলবে চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত। তারই অংশ হিসেবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে এই ‘বিতর্ক উৎসব’ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
মেশকাত মিশু
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ।।  বিডি টাইম্‌স নিউজ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে