রাবি প্রতিবেদকঃ ‘প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে টিকে থাকা এবং এগিয়ে চলার বিষয়টি মাথায় রেখে আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। পাশাপাশি উচ্চশিক্ষার মান নিয়ে কেউ যাতে প্রশ্ন তুলতে না পারে তাও নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষা যেন সার্টিফিকেট সর্বস্ব বাণিজ্যিক পণ্যে পরিণত না হয় তা দেশ ও জাতির স্বার্থে সম্মিলিত ভাবে নিশ্চিত করতে হবে। এটা করতে না পারলে দেশে উচ্চশিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বাড়বে এবং বিশ্ব প্রতিযোগিতায় আমরা পিছিয়ে পড়ব।’ শনিবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দশম সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেডিয়াম মাঠে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো: আব্দুল হামিদ ।
সমাবর্তন বক্তার বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ইমেরিটাস আলমগীর মোহাম্মদ সিরাজুদ্দীন বলেন, এদেশের বিপুল জনগোষ্ঠীর বিশাল একটি অংশ তরুণ। প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে টিকে থাকতে হলে এ বিশাল তরুণ সমাজকে দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করতে হবে। আর এ জন্য শিক্ষার সকল স্তরে গুণগত মান নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।
সমাবর্তনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো জ্ঞানচর্চা, গবেষণা ও নতুন জ্ঞান অনুসন্ধান ও সৃষ্টি করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সৃষ্ট জ্ঞান আমাদের মৌলিক ও বিশেষ সমস্যাগুলোর সমাধান দিতে পারে। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সে ধরনের পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য-১ প্রফেসর আনন্দ কুমার সাহা এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন উপ-উপাচার্য-২ চৌধুরি জাকারিয়া, শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর মোস্তাফিজুর রহমান আল-আরিফ। এর আগে বেলা ৩টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেডিয়াম মাঠে শোভাযাত্রাসহ প্রবেশ করেন রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মো: আব্দুল হামিদ। এরপর জাতীয় সংগীত পরিবেশন এবং পবিত্র ধর্মগ্রন্থগুলো থেকে পাঠ করা হয়।
দুটি আবাসিক হলের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন:সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আগে ছাত্রীদের জন্য ‘দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল’ ও ছাত্রদের জন্য ‘শহীদ এ এইচএম কামারুজ্জামান’ হল নামে দুইটি দশ তলা বিশিষ্ট আবাসিক হলের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর এম আব্দুস সোবহান, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা ও উপাচার্য মো: চৌধুরি জাকারিয়া, কোষাধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান আল-আরিফ প্রমুখ।
ইতিমধ্যে হল নির্মাণের স্থানও নির্বাচন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বেগম খালেদা জিয়া হলের পূর্ব পাশে নির্মাণ করা হবে ‘দেশরত্ন শেখ হাসিনা’ হল। অপরদিকে ছেলেদের জন্য জিমনেসিয়ামের পাশে শহীদ ‘এ এইচ এম কামারুজ্জামান’ হল নির্মিত হবে। উভয় হলই ১০ তলা বিশিষ্ট হবে।
ডি.লিট ডিগ্রী:এদিন সমাবর্তনে বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও বরেণ্য কথা সাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক এবং বাংলা একাডেমি সাবেক পরিচালক সেলিনা হোসেনকে সম্মানসূচক ডি.লিট ও অভিজ্ঞানপত্র প্রদান করেন রাষ্ট্রপতি।
নির্দিষ্ট সময়ে সমাবর্তন চান গ্রাজুয়েটধারীরা: এদিকে নির্দিষ্ট সময়ে নিয়মিত সমাবর্তন অনুষ্ঠান চান গ্রাজুয়েটধারীরা। কেননা এর ফলে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করার পরপরুই শিক্ষার্থীরা আনুষ্ঠানিকভাবেই সার্টিফিকেট নিয়ে বের হতে পারবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের দশম সমাবর্তনে আসা গ্রাজুয়েটধারীরা শিক্ষার্থী আবু যর গিফারী মোল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘নির্দিষ্ট সময়েই সমাবর্তন হওয়ার সুফল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও প্রশাসন উভয়েই ভোগ করতে পারবে। সমাবর্তন দেরিতে হলে কর্মব্যস্ততার কারণে অনেকে সমাবর্তনে অংশ গ্রহণ করতে পারে না। মাস্টার্স সম্পন্ন করার বছরেই সমাবর্তন হলে একটি অন্যরকম আমেজ সৃষ্টি হয় এবং সবাই অংশগ্রহণ করতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। #
মেশকাত মিশু ।। বিডি টাইমস নিউজ