ভোলাঃ ভোলায় পান চাষের ব্যপক সম্ভাবনা থাকলেও কৃষিবিভাগের পৃষ্ঠপোষকতার অভাবসহ বিভিন্ন কারণে দিন দিন কমে যাচ্ছে পান চাষের পরিমাণ। ভোলায় পান চাষীদের পাশে কেউ নেই। সরকারি বেসরকারি কোন সাহায্য সহায়তাই তারা পাচ্ছে না। একদিকে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি অপর দিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদেরকে সরকারি প্রণোদনা দেয়ার ব্যবস্থা না থাকায় আগ্রহ হারাচ্ছেন চাষীরা।

পলিমাটি দিয়ে গড়া দ্বীপ জেলা ভোলার মাটি এবং আবহাওয়া পান চাষের অনুকূলে থাকায় যুগ যুগ ধরে এখানে পান চাষ করে আসছেন চাষীরা। এক সময় প্রায় প্রতিটি গ্রামেই পানের বরজ দেখা যেত। এখন তা অনেক কমে এসেছে। পূর্ব পুরুষের পেশা হিসেবে এখনো যারা পানের বরজ নিয়ে আছেন তারা জানান, পান চাষের জন্য সরকারি কোন সাহায্য সহায়তা পাওয়া যাচ্ছে না। ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে যে কোন ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হলে সারকার তাদের সহায়তা করে কিন্তু পানের বরজ ক্ষতিগ্রস্ত হলে চাষীদের পাশে কেউ দাঁড়ায় না।

বংশ পরম্পরায় চাষীরা পান চাষের পদ্ধতি আয়ত্ব করে থাকেন। আবার কেউ কেউ অন্যের বরজে কাজ করতে করতে অভিজ্ঞতা লাভ করেন। রোগবালাই কিংবা সমস্যা দেখা দিলে তারা নিজেদের অভিজ্ঞতা কিংবা ঔষধ বিক্রেতাদের সাথে পরামর্শ করে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। তখন কৃষি বিভাগ থেকে কোন পরামর্শ পায়না চাষীরা। ভোলার পান স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় রাপ্তানি হত। কিন্তু সম্প্রতি ভারতীয় পান দেশে অবাদে প্রবেশ করায় স্থানীয় পানের চাহিদা কমে যাচ্ছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে স্থানীয় পানচাষীরা।

অন্যান্য যে কোন ফসলই এখন আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা হয়। কিন্তু পানচাষীরা এখনো সেই মান্দাতার আমলের পদ্ধতিতেই পান চাষ করছে। এ জন্য এখানকার পান আকারে কিছুটা ছোট। তাই খরচ বেশি পড়লেও দাম বেশি পাচ্ছে না চাষীরা। এব্যাপারে ভোলা সদর, ভোলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মিলন রায় জানান, পান চাষের উপর কৃষি বিভাগের কোন কার্যক্রম নেই। তবে চাষীদেরকে বিভিন্ন সময় বুদ্ধি পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করা হয় বলে জানিয়েছেন কৃষি বিভাগের এই কর্মকর্তা।

এব্যাপারে ভোলার কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর উপ-পরিচালক প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, ২০১৭ সালের তথ্য অনুযায়ী ভোলা জেলায় মোট ৫৩৬ হেক্টর জমিতে পান চাষ হচ্ছে। এক দশক আগেও যার পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ ছিল।

ফয়সল বিন ইসলাম নয়ন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে