দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকায় গত ৩০ অক্টোবর প্রকাশিত “আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ইবির দুই শতাধিক শিক্ষক-কর্মকর্তা শিক্ষার্থীর তথ্য” শীর্ষক শিরোনামের সংবাদটিতে উল্লেখিত শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের নামের তালিকা তৈরির বিষয়ে কমিটির কোন সংশ্লিষ্টতা নেই দাবি করে বিবৃতি দিয়েছেন তথ্য সংগ্রহ কমিটি। ভুক্তভোগীদের নিকট থেকে প্রাপ্ত তথ্যই তারা প্রেরণ করেছেন বলে দাবি করেন। নিজেরা কোন তালিকা করেননি। সোমবার (০৪ নভেম্বর) কমিটির সদস্য সচিব সাহেদ হাসান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গঠিত তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ কমিটি।

বিবৃতিতে বলা হয়, কমিটি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ব্যক্ত করছে যে, উক্ত রিপোর্টে উল্লেখিত শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের নামের তালিকা তৈরির বিষয়ে কমিটির কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। এখানে উল্লেখ্য যে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গঠিত উক্ত কমিটির মূল দায়িত্ব ছিল বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে, সাবেক সরকারের রাষ্ট্রীয় বাহিনী, দলীয় ছাত্র সংগঠন কর্তৃক ১ জুলাই ২০২৪ থেকে ৫ আগস্ট ২০২৪ পর্যন্ত হত্যা, গণহত্যা, আটক, নির্যাতন, লুন্ঠন, অগ্নিসংযোগ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করা।

কমিটি ভুক্তভোগী সংশ্লিষ্ট সকলের নিকট থেকে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করেন। কমিটি সুনির্দিষ্টভাবে কারোর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ অথবা অভিযুক্তদের কোন তালিকা তৈরি কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করেন নি এবং তা তৈরি করার কোন এখতিয়ার কমিটির ছিল না। কমিটি আশা করছে যে এই বিবৃতি প্রচারের পর সংশ্লিষ্ট সকলের যেকোন ধরনের ভুল বোঝাবুঝির অবসান হবে। উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে বিরোধিতা, হামলা, নির্যাতনসহ বিভিন্ন কর্মকান্ডে যুক্ত থাকা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের তথ্য-উপাত্ত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রেরণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তথ্য চেয়ে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া চিঠির প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়বিবৃতি দিয়েছে অপরাধ গঠিত কমিটি গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে তথ্য সংগ্রহ ও একত্রিত করে প্রেরণ করেছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন দমনে সাবেক সরকারের বিভিন্ন বাহিনী ও দলীয় ক্যাডার কর্তৃক ১লা জুলাই থেকে ৫ই আগস্ট পর্যন্ত হত্যা, গণহত্যা, আটক, নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত কাজে সহায়তার জন্য তথ্য চেয়ে জেলা প্রশাসনকে চিঠি পাঠায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। পরে গত ২৪ অক্টোবর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে চিঠি পাঠায় কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন। এর প্রেক্ষিতে গত ১ অক্টোবর ৬ সদস্যের কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটিতে ছিলেন আহবায়ক হিসেবে প্রফেসর ড. নূরুন নাহার, সদস্য- প্রফেসর ড. আব্দুস শাহীদ মিয়া, প্রফেসর ড.কামরুজ্জামান, প্রফেসর ড. লুৎফর রহমান, মোহাম্মদ আনোয়ার ওহাব ও সদস্য সচিব সাহেদ হাসান।

গঠিত কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তর, বিভাগ ও আবাসিক হলে চিঠি প্রেরণের পাশাপাশি ৯ অক্টোবর গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে তথ্য ও ডকুমেন্ট আহবান করে। কমিটি প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত একত্রিত করে ১৯ অক্টোবর উপাচার্যের নিকট হস্তান্তর করে। পরে উপাচার্য এসব তথ্য-উপাত্ত সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরণ করেছেন বলে জানিয়েছে রেজিস্ট্রার দপ্তর।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে