হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালকে কেন্দ্র করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স জিএসই বহরকে সমৃদ্ধ করতে ও সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ হিসেবে অত্যাধুনিক ইক্যুইপমেন্ট ক্রয় করেছে। গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সক্ষমতার উন্নয়নে বিভিন্ন ধাপে প্রায় ১০০০ কোটি টাকার ইক্যুইপমেন্ট ক্রয়ের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু ইক্যুইপমেন্ট বিমান বহরে যুক্ত হয়েছে। ৯ অক্টোবর ২০২৪ তারিখ গ্রাউন্ড সার্ভিস ইক্যুইপমেন্ট (জিএসই) বহরে ফ্রান্স থেকে সদ্য আমদানিকৃত ৬টি ব্র্যান্ড নিউ বেল্ট লোডার সংযোজিত হয়েছে। উক্ত বেল্ট লোডার সমূহ ছোট ও মাঝারি মাপের উড়োজাহাজ যেমন: বোয়িং ৭৩৭, বোয়িং এ-৩২০ এবং ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজে কার্গো ও ব্যাগেজ উত্তোলন ও অবতরণ কাজে ব্যবহৃত হবে। বেল্ট লোডারগুলোতে নিউ জেনারেশনের আধুনিক সেন্সর যুক্ত থাকায় এয়ারক্রাফটের নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে যথার্থ ভূমিকা পালন করবে।

উল্লেখ্য, জিএসই বহরে ইতঃপূর্বে আরও ২০টি বেল্ট লোডার ছিলো, এর সাথে নতুন ৬টি যুক্ত হওয়ায় সক্ষমতা বহুগুণ বৃদ্ধি পেল। এর ফলে বিভিন্ন এয়ারলাইন্স এর বাড়তি চাহিদাসমূহ সহজে পূরণ করা যাবে। বিমান এর জিএসই বহরে বর্তমানে ২০০০ এর মত মটরাইজড ও নন-মটরাইজড ইক্যুইপমেন্ট রয়েছে। হাইলোডার, কন্টেইনার প্যালেট ট্রান্সপোর্টার, এয়ার কন্ডিশনিং ভ্যান, প্যাসেন্জার স্টেপ, ওয়াটার কার্ট, ফ্লাশ কার্ট, এম্বুলিফটসহ আরও অন্যান্য ইক্যুইপমেন্ট ক্রয়ের কাজ চলমান রয়েছে। কয়েক মাসের মধ্যেই এসকল বহু ইক্যুইপমেন্ট জিএসই বহরে যুক্ত হবে। জিএসই বিভাগ দৈনিক ৩২টি থেকে ৪০টি এয়ারলাইন্স এর ১৬০-১৭০টি ফ্লাইট হ্যান্ডলিং করে থাকে। থার্ড টার্মিনালকে কেন্দ্র করে নতুন নতুন ইক্যুইপমেন্ট ক্রয়ের পাশাপাশি জিএসই অপারেটর, মেকানিক নিয়োগ এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জিএসই বিভাগের সক্ষমতা বহুগুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। সম্মানিত যাত্রীদের ব্যাগেজ প্রাপ্তির সময় কমিয়ে আনা হয়েছে। ১৮-৫১ মিনিটের মধ্যে ব্যাগেজ ডেলিভারির হার ৮৫% এর উপরে উন্নীত হয়েছে। এ হার শীঘ্রই শতভাগে উন্নীত করার প্রচেষ্টা চলমান রয়েছে। এছাড়াও এয়ারপোর্ট সার্ভিসে জনবল বৃদ্ধির জন্য ১০০ গ্রাউন্ড সার্ভিস এসিস্টেন্ট নিয়োগ করা হয়েছে এবং নতুন আরও জনবল নিয়োগের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

ইতোমধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সার্ভিসের উন্নতির স্বীকৃতি হিসেবে ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট এসোসিয়েশন সেফটি অডিট ফর গ্রাউন্ড অপারেশন্স (আইএসএজিও) সনদ লাভ করেছে। উল্লেখ্য, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বিগত ৫২ বছর যাবৎ বাংলাদেশে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা প্রদান করে আসছে। বর্তমানে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা রয়েছে। প্রবেশের গেইট, চেক ইন কাউন্টার, ব্যাগেজ বেল্ট, বোর্ডিং ব্রিজ, ইত্যাদি প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। থার্ড টার্মিনাল চালু হলে এয়ারপোর্টের অবকাঠামোগত সমস্যার সমাধান হবে এবং সীমাবদ্ধতাগুলো দূর হবে। থার্ড টার্মিনালের আধুনিক প্রযুক্তি ও অবকাঠামোগত ব্যপকতার কারণে বিমান গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা অত্যন্ত সফলতার সাথে প্রদান করতে সক্ষম হবে। রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স থার্ড টার্মিনালে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা প্রদানে সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত আছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে