নাগরিক লেখা- নাইম হাসানঃ আমি আমার এই প্রিয় বাংলাদেশের একজন খুবই সাধারণ নাগরিক হিসেবে বাকস্বাধীন ও গণতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে বলতে চাচ্ছি আজ আমি সত্যিই খুব লজ্জিত, এই ভেবে যে, না চাইতেও আমার এখন কিছু লজ্জাকর কথা বলতে হচ্ছে এখানে। আমার কাছে এখন মনে হচ্ছে এই দেশটার কিছু সংখ্যক সাংবাদিকরা এখন আর সাংবাদিক নাই, এরা এখন সাংঘাতিক হয়ে গিয়েছেন। সব দিক থেকেই, যাদের বেশির ভাগের মধ্যেই বিবেক- বুদ্ধি সব কিছুই মনে হচ্ছে যথেষ্ট পরিমান লোপ পেয়েছে।
সাংবাদিক সাগর- রুনির হত্যা থেকে শুরু করে আজ একটি অনলাইন পত্রিকার সম্পাদক এবং তিনি একটি জাতীয় গণমাধ্যমের কর্মী নোমান রহমান পর্যন্ত যারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাবে নির্যাতনের, আঘাতের এবং গুম-খুনের শিকার হয়েছেন তাদের জন্য সহকর্মী বাকি সাংবাদিকরা কি করছেন বা করেছেন? ফেইসবুক বা হোয়াটসআপ গ্ৰুপে পোস্ট, ফেইসবুক এ পোস্ট, প্রেসক্লাবের সামনে বসে সমাবেশ অথবা কিছু বড় বড় সাধারণ গদবাঁধা কথা। এই ছাড়া আর কিইবা করার আছে, তাই না?
আমাদের এই দেশের প্রেক্ষাপট থেকে ইতিহাস ঘেটে দেখবেন উদাহরণস্বরূপ বলছি, একজন পুলিশ যখন অতর্কিত ভাবে কোনো হামলায় আঘাত পায় বা কোনো না কোনো ভাবে বেধড়র পিটুনি খায় তখন দেখবেন পুরো পুলিশ জাতি কিভাবে তাদের পুলিশ ভাইয়ের বা বোনের উপর অন্যায় অত্যাচারের বিচার আদায় করে নেয় প্রশাসনিক এবং আইনি উপায়ে। একজন উকিল যখন অতর্কিত সন্ত্রাসী দ্বারা অতর্কিত ভাবে কোনো হামলায় আঘাত পায় বা কোনো না কোনো ভাবে বেধর পিটুনি খায় তখন দেখবেন কিভাবে সমগ্র উকিল সমাজ সেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিচার আদায়ের জন্য বিচার কার্যক্রম বন্ধ রেখে হলেও পদক্ষেপ নেয়, একজন চিকিৎসক যখন অতর্কিত সন্ত্রাসী দ্বারা অতর্কিত ভাবে কোনো হামলায় আঘাত পায় বা কোনো না কোনো ভাবে বেধর পিটুনি খায় তখন দেখবেন চিকিৎসক সমাজ কিভাবে চিকিৎসা বেবস্থা বন্ধ করে হলেও বিচার আদায় করে নেয়ার পদক্ষেপ নেয়, এটাই আসলে অনেকটা স্বাভাবিক এখন আমাদের এই দেশের সময়ের প্ৰেক্ষাপটে। কিন্তু এই পন্থাগুলো ঠিক কি ঠিক না তা বিচার বিশ্লেষণ করার অতটা গভীরে আমি যাবো না।
কিন্তু একজন সাংবাদিক যখন অতর্কিত ভাবে কোনো হামলায় আঘাত পায় বা কোনো না কোনো ভাবে বেধর পিটুনি খায় তখন দেখবেন তার বিচার এর জন্য বিভিন্ন অনলাইন গ্ৰুপে পোস্ট আর রাস্তায় দাঁড়িয়ে বড় বড় গদবাঁধা কথা বলা ছাড়া আর কিছুই করেন না। আর এই গুলো করেইবা কি হবে, কোনো বিচার আদৌ কি পাওয়া যাবে? যেখানে উচিত পুরো বাংলাদেশ জুড়ে গণমাধ্যম গুলোর একযোগে প্রতিবাদ করা এইসব অতর্কিত সন্ত্রাসীদের বিচার এর জন্য এবং প্রশাসনের সাহায্যে এদের কে দ্রুত আটক করে বিচারে আনা। কিছু মনে করবেন না, অনেক চুপ থেকেছি কিন্তু এখন না বলে পারলাম না, আপনাদের মধ্যে এই সাংঘাতিক রূপক সাংবাদিক এর সংখ্যাটা আজ হয়তো একটু বাড়ছে বলেই যেকোনো স্থানেই সাংবাদিকদের উপর মানুষের আস্থা উঠে যাচ্ছে , সম্মান উঠে যাচ্ছে এবং হিংস্র থাবাও সাংবাদিকদের গায়ে উঠে যাচ্ছে খুব সহজেই। আমি আজকে একটা অনলাইন গ্ৰুপে একটি অনলাইন পত্রিকার সম্পাদক এবং তিনি একটি জাতীয় গণমাধ্যমের কর্মী নোমান রহমান এর উপর হামলার ঘটনার পোস্টের অবস্থা দেখে অবাক হলাম, একজন পত্রিকার সম্পাদক মঙ্গলবার(১০’ই সেপ্টেম্বার ২০২৪) তিতাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হামলায় আহত হলো অথচ এখানে মনে হচ্ছে লোক দেখানো শোক দিবস পালন করতাছে অনলাইন গ্রূপে পোস্ট দিয়ে বাকি কিছু সংখ্যক সহকর্মী সাংবাদিক, উচিত ছিল এটার তাৎক্ষণিক জবাব স্বরূপ সকল সংবাদ মাধ্যমগুলোতে একযোগে এই সংবাদ প্রচার করে সরকার ও প্রশাসনের কাছে বিচার চাওয়া এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি বেবস্থা গ্রহণ করা।
তাছাড়া, আরেকটি বাস্তব সত্যি কথা হলো এই ধরণের অনেক সংস্থা গুলো এমনিতেই কিছুটা দুর্নীতিগ্রস্থ আমাদের এই দেশে, আমরা সবাই তা কম বেশি জানি, এদের এত বড় সাহস হয় কথা থেকে যে এদের দুর্নীতির বা অস্থিরতা অবস্থানের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে যে কোনো সাংবাদিক আঘাতপ্রাপ্ত হবে, অপমানিত হবে , অপদস্থ হবে ? যেই কোনো ধরনের দুর্নীতি গ্রস্থ সংস্থা গুলোকে এমন ভাবে আইনের মাঝে ফেলতে হবে যাতে ওরা বাধ্য থাকে সাংবাদিকদের কাছে , জনগণের স্বার্থে , দেশের স্বার্থে সত্যতার জন্য জবাবদিহি উপস্থাপন করতে। আমার কথা গুলো সকল সাংবাদিকদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বললাম, কিন্তু যারা সাংঘাতিক রূপক সাংবাদিক তাদের কাছে আমার চাওয়া, আপনারা নিজেদের বিবেক বুদ্ধি বিকিয়ে না দিয়ে সত্যিকার অর্থেই সাংবাদিকতা করবেন আর প্রতিটি সাংবাদিক প্রতিটি সাংবাদিকের পাশে দাঁড়াবেন এক একজন সহযোদ্ধা হয়ে। আমি আমার স্থান থেকে আজ এই জঘন্য হামলার তীব্র নিন্দা জানাই এবং এর বিচার চাই। পরিশেষে বিডি টাইম্স নিউজের সম্পাদক নোমান রহমানের সুস্থথার জন্য এবং তার নিরাপদ পেশাদারিত্বের জীবনের জন্য দোয়া করছি।