জহির সিকদারঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মিছিলে হামলার ঘটনায় থানায় রুজুকৃত  দুই মামলায় আওয়ামী লীগের আসামীদের সাথে জড়িয়ে দেয়া হয়েছে বিএনপির ৯ নেতাকর্মীর নামও। এতে সংশ্লিষ্ট মহলে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার পাশাপাশি বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন স্থানীয় বিএনপি নেতারা। অপরদিকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনসহ বিগত সময়ে সরকার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নিপীড়নের শিকার নেতাকর্মীরা নিজ দলের দায়ের করা মামলার আসামী হয়ে পুরোই হতবাক।

জানা যায়, গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আহুত দেশব্যাপী সরকার পতনের একদফা অংশ হিসেবে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ককের আশুগঞ্জ গোল চত্ত্বর এলাকায় মিছিল বের করেছিল ছাত্র-জনতা। উক্ত মিছিলে তৎকালীন সরকার সমর্থকরা অতর্কিত হামলা চালায়। এতে গুলিবিদ্ধসহ বেশ কয়েকজন আন্দেলনকারী   আহত হন। এ ঘটনায় গত ২০ আগস্ট উপজেলার আড়াইসীধা গ্রামের যুবদল নেতা রমজান মিয়া ও মৈশার গ্রামের স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা হাসান মিয়া বাদী হয়ে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের১৩৫ জন নেতাকর্মীদের নামে আশুগঞ্জ থানায় দুটি পৃথক মামলা দায়ের করেন। মামলা দুটি বিষ্ফোরক আইনে রুজু করা হয়। কিন্তু এসব মামলায় অদৃশ্য কারণে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমর্থক ৯জন বিএনপি নেতাকর্মীর নাম জুড়ে দেয়া হয়। মামলায় আসামী হওয়া বিএনপি নেতারা হলেন, উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ নোমান মিয়া, সোনারামপুর গ্রামের যুবদল নেতা রাশেদ মিয়া, খড়িয়ালা গ্রামের যুবদল নেতা রাকিব, আড়িইসীধা গ্রামের বিএনপি নেতা মোঃ ইদ্রিছ, খোলাপাড়া গ্রামের জামায়াতের সমর্থক পল্লী চিকিৎসক জুবায়ের এবং লালপুর ইউনিয়ন বিএনপির কর্মী ফুরকান মিয়া সুন্দর আলী ও মিটু মিয়া। তাদের রাজনৈতিক পরিচয় দলীয় সূত্র নিশ্চিত করছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একাধিক সূত্র জানায়, পারষ্পারিক গ্রাম্য বিরোধের জেরে এসব মামলায় সুযোগ বুঝে বিএনপির নেতাকর্মীদের নাম জড়িয়ে দেয়া হয়েছে। আসামী হওয়া নেতারা বলেন, দীর্ঘদিন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের দ্বারা নির্যাতিত-নিগৃহিত হয়েছি।  এখন নিজ দলের মামলায় আমাদের নাম। তারা অবিলম্বে মামলার বাদীকে এ ব্যাপারে আইনগতভাবে সংশোধনী জমা দেয়ার দাবি জানান। এ ব্যাপারে মামলা দুটির বাদীর সঙ্গে কথা বলার জন্য তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। উল্লেখ্য যে,আশুগঞ্জ উপজেলার বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে পূর্ব থেকেই বিভক্ত হয়ে আছে। আর এর মুল কারন ত্যাগী নেতা-কর্মীদের মুল্যায়ন না করা। তবে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক নাছির উদ্দিন মামলার আসামীর তালিকায় কিছুটা ভুলভ্রান্তির কথা স্বীকার করে বলেন, ‘আমরা এ ব্যাপারে বিব্রত। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিশ্বস্ত একটি সুত্রে জানা যায়  আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির কিছু অসাধু নেতার সাথে এসব দলীয় নেতা-কর্মীর পূর্ব থেকে বিরোধ চলে আসছিল। নেতাদের মধ্যে  দুএকজন আবার অনেককে মামলার আসামী করেছেন নিতান্তই তাদের স্বার্থ সিদ্বির জন্য। তারা আবার নানা দল থেকে কৌশলে বিএনপিতে নিজেদের স্থান করে নিয়েছে। এতে করে তাদের সাথে কলহের প্রতিশোধ নেয়ার পাশাপাশি মামলা দিয়ে তাদেরকে হয়রানী করার উদ্দেশ্যে এবং  পাশাপাশি তাদেরকে আর্থিক অস্বচ্ছতা ভোগাতেই পরিকল্পিত ভাবে জেনে শুনে তাদেরকে মামলার  আসামী করা হয়েছে। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে কানাগুনা চলছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপি অনুসারী বেশ কিছু নেতাকর্মী বলেন,কোন এক নেতার সাথে টাকা পয়সার লেনদেনসহ নারী সংক্রান্ত ঘটনা রয়েছে। মামলা থেকে দ্রুত অব্যাহতির পাশাপাশি  আসামী থেকে তাদের নাম প্রত্যাহরের দাবী জানান তারা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিউজ ডেস্ক।। বিডি টাইমস নিউজ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে