চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক সুবিধার প্যাকেজ ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে দৃঢ় সহায়তা দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। বুধবার বিকেলে বেইজিংয়ের গ্রেট হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে তিনি বাংলাদেশকে গ্রান্ট বা সহায়তা, সুদমুক্ত ঋণ, কনসেশনাল বা ছাড়যুক্ত ঋণ ও বাণিজ্যিক ঋণ -এই চার ধরনের অর্থনৈতিক সুবিধার একটি প্যাকেজ দেওয়ার ঘোষণা দেন।
সেইসাথে চীনের প্রেসিডেন্ট নিজে থেকেই বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ১৩ লাখ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সর্বোচ্চ সহযোগিতা দেওয়ার কথা বলেন। তিনি মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সাথে এবং প্রয়োজনে আরাকান সেনাদলের সাথেও কথা বলবেন বলে জানান। বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বেইজিংয়ের সেন্ট রেজিস হোটেলে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান এমপি ও প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী হাছান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এই চীন সফর শতভাগ সফল হয়েছে। চীনের প্রেসিডেন্ট বৈঠকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নকে অভূতপূর্ব বর্ণনা করেন এবং চীনা সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলে জানান। শি জিনপিং বলেন, ২০২৫ সালে চীন-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরপূর্তিতে সম্পর্ককে দ্বিতীয় পর্যায়ে উন্নীত করে এ উদযাপনকে অর্থবহ করতে তারা প্রস্তুত।
চীনের প্রেসিডেন্ট ‘গুড গভর্নেন্স নিডস গুড পার্টি’ বা ‘সুশাসনের জন্য ভালো দল’ মন্তব্য করে চীনের কম্যুনিস্ট পার্টির সাথে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যোগাযোগ বৃদ্ধি ও বন্ধনের ওপর জোর দেন, উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। পাশাপাশি শি জিনপিং বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ, কারিগরী, কৃষি ও উৎপাদন খাতে সহায়তা এবং ছাত্রবৃত্তি বৃদ্ধির আশ্বাস দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের আনোয়ারায় চীনের জন্য একক বরাদ্দ ৮০০ একর জমিসহ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও আইটি ভিলেজগুলোতে বিনিয়োগবৃদ্ধি এবং বাংলাদেশ থেকে পাট ও চামড়াজাত পণ্য, ফার্মাসিউটিক্যালস, সিরামিক, আম ও অন্যান্য ফলসহ পণ্য আমদানি বৃদ্ধির মাধ্যমে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনার আহবান জানালে চীনের প্রেসিডেন্ট ইতিবাচক সাড়া দেন।