সিনান আহমেদ শুভ, রাজবাড়ী প্রতিনিধিঃ রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পদ প্রার্থী ৩১ বছর বয়সী মো. রাতুল আহম্মেদ। গত ১৪ জুন ছাত্রলীগের কাউন্সিল হয়। এ’কাউন্সিল অনুষ্ঠানে সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন সদ্য বিলুপ্ত হওয়া কমিটির সাধারন সম্পাদক আবির হোসেন হৃদয় ও পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি রাতুল আহম্মেদ। সাধারন সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন আরো পাঁচজন। কাউন্সিলে এখনো কোন পদ পদবি ঘোষনা করা হয়নি।

সভাপতি প্রার্থী রাতুল আহম্মেদ উপজেলা ছাত্রলীগের পদ পেতে ইতমধ্যে দুইবার বয়স পরিবর্তন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার এসএসসি সার্টিফিকেট ও ভোটার তালিকা ও জন্মনিবন্ধন অনুযায়ী প্রকৃত বয়স ১৪/০৭/১৯৯৩ সাল অর্থাৎ ৩১ বছর উল্লেখ থাকলেও সেখানে গোয়ালন্দ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পদ পেতে বয়স পরিবর্তন করে ১৪/০৭/১৯৯৫ করা হয়। কারন ছাত্রলীগের কোন পদ পদবী পেতে হলে ২৮ বছরের পর ৩৬৫ দিন অর্থাৎ আরো এক বছর বয়সসীমা পর্যন্ত পদ পদবীর জন্য আবেদনের যোগ্যতা থাকে। কিন্তু পদ পেতে সে পর পর দুইবার বয়স পরিবর্তন করেন। কারন এ পদে সর্বোচ্য ২৯ বছর বয়স সীমা থাকতে হবে।এর ১ দিন বেশি হলেও গঠনতন্ত্রের ৫(ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সে ছাত্রলীগের কোন পদে আবেদন করতে পারবেনা। জেলা ছাত্রলীগের কাছে বার বাট বয়স পরিবর্তন করে সিভি জমা দেওয়া হয়। এর আগে পৌর কমিটির পদ পেতে সেখানেও বয়স কমিয়ে ১৪/০৭/১৯৯৪ সাল দেকানো হয়।অথচ এসএসসি সার্টিফিকেটে অনলাইন ভেরিফিকেশন ১৪/০৭/১০৯৩ সাল পাওয়া যায়।জন্ম নিবন্ধন ও সার্টিফিকেটে থাকা বয়স ১৪/০৭/১৯৯৩ সাল থাকলেও নতুন ন্যাশনাল আইডি কার্ডে বয়স কিভাবে কমানো হল। গঠনতন্ত্র না মেনে বয়স কমিয়ে রাতুল আহম্মেদ ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র বহির্ভূত কাজ করেছেন।তার জন্মনিবন্ধন নম্বর ১৯৯৩৮২২২৯০২০০০৩৭৯।

ন্যাশনাল আইডি কার্ড করতে হলে এই জন্মনিবন্ধনের এই নম্বর অথবা এসএসসি সার্টিফিকেটের বয়স দিয়ে করতে হবে।অথচ আইডি কার্ডে বয়স কমানো হলো কিসের তথ্য দিয়ে। ভোটার তালিকা অনুযায়ী মেহাম্মদ রাতুল আহম্মেদ, পিতা মোহাম্মদ কোব্বাত আলী মন্ডল, মাতাঃ মোছা. রিনা বেগম, গ্রাম দেওয়ানপাড়া, গোয়ালন্দ। ভোটার নম্বর ৮২০০১১০০১০৩। শুধু বয়স পরিবর্তনই না এর আগে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদকে অফিস কক্ষ ও বঙ্গবন্ধুর ছবও ভাংচুরও করেছিলো রাতুল।সে সময় ছাত্রলীগের উপজেলা কমিটির সদস্য পদ থেকে তাকে বহিস্কার করা হয়। এদিকে গোয়ালন্দ উপজেলা সাধারন সম্পাদক পদে ইমরান আহম্মেদ আকাশ সে ছাত্রলীগ নেতা জাহাঙ্গীর হত্যা মামলার ১ নং আসামী।গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ইমরান আহম্মেদ আকাশও ছাত্রলীগের কোন পদে আবেদন করতে পারবেনা।২০১৫ সালের ১৩ জুলাই গোয়ালন্দ পৌর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেনকে কুপিয়ে হত্যা করে ইমরান আহম্মেদ আকাশ সহ তার সহযোগীরা।ইমরান সদ্য বিলুপ্ত হওয়া উপজেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক। তার রয়েছে নারী ঘটিত কেলেঙ্কারীও।একটি সুশৃঙ্খল ছাত্রলীগের কমিটিতে এদের মতো নেতা নেতৃত্বের জায়গায় কতটুকু দলকে ও দলের কর্মিদের সঠিক পথে পথ দেখাতে পারবে সে বিষয়ে স্বয়ং দলের নেতাদের রয়েছে ভিন্ন মত।

গোয়ালন্দ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী মো. রাতুল আহম্মেদের কাছে দুইবার বয়স পরিবর্তন করে প্রার্থী হওয়ার বিষটি কতটুকু গঠনতন্ত্রের মধ্যে পড়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি দুইবার বয়স পরিবর্তন করিনাই, একবার পরিবর্তন করেছি।এ বিষয়ে আপনার সাথে পরে কথা বলবো।

রাজবাড়ী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. শাহীন শেখ জানান, আমি জেনেছি গোয়ালন্দ উপজেলা ছাত্রলীগ কমিটির কাউন্সিল গত ১৪ জুন অনুষ্ঠিত হয়েছে।সে পর পর দুইবার ন্যাশনাল আইডি কার্ডের বয়স পরিবর্তন করেছে।যা ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র পরিপন্থি।এটা আমি কখনো সমর্থন করিনা কোরবনা। আমি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের কাছে এ বিষয়টি নিয়ে চিঠি লিখবো। ২৯ বছর বয়স পার হলে কোন প্রার্থী ছাত্রলীগের কোন পদে আবেদন করতে পারবেনা এবং নেতৃত্ব স্থানীয় পর্যায়ে আসতে পারবেনা।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. জসিম উদ্দিনের কাছে মো. রাতুল আহম্মেদের জন্মনিবন্ধন ও ভোটার তালিকা ও এসএসসি সার্টিফিকেট অনুযায়ী বয়স ছিল ১৪/০৭/১৯৯৩ সাল,অর্থাৎ ৩১ বছর।কিন্তু ন্যাশনাল আইডি কার্ডে পর পর দুইবার বয়স কিভাবে কমানো হল,এ বিষয়ে তার কাছে জানতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,বয়স পরিবর্তেনর বিষয়টি তার যদি জন্মনিবন্ধন না থাকে তাহলে সে সার্টিফিকেট দিয়ে জন্মসাল ও তারিখ পরিবর্তন করতে পারবে।সে যদি মিথ্যা বা ভূয়া কাগজপত্র দাখিল করে তাহলে সে দায়ভার তাকেই নিতে হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে