রাশেদুল হাসান কাজল, ফরিদপুর সংবাদদাতা।। ফরিদপুর সদরের গেরদা ইউনিয়নের গেরদা গ্রামের দরিদ্র রিকসাচালক শেখ হারুন(৫২)। গত ২০’শে মার্চ কালো রাতে ভয়াবহ এক অগ্নিকান্ডে নিমিশেই ভষ্ম হয়ে যায় তার বসত ঘর, রান্না ঘর ও জীবিকার বাহন রিকসাটি। নিজের জীবনের চেয়ে ঘরটাকে বড় করে দেখেছিলেন তাইতো আপন ঘরটিকে বাঁচাতে আগুন নেভাতে গিয়ে নিজেও দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। সেই ভয়াল রাত ২ টার দিকে এলাকাবাসী ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মিরা উপস্থিত হয়ে আগুন নেভাতে পারলেও বাঁচাতে পারেনি এক বিন্দু সম্পদ। যে ঘরে রাতে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে শান্তিতে শুুয়ে ছিলেন, সে ঘর এক ঘন্টার ব্যবধানে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে, এ দৃশ্য যেন কোন ভাবেই মানতে পারছেন না হারুন। হারুন সেই পোড়া ভিটা থেকে দগ্ধ হয়ে যেতে চাইছেন না, এলাকাবাসী টেনে তাকে নিতে পারছেন না হাসপাতালে। পরে ফায়ার সার্ভিসের এ্যামুলেন্সে নিয়ে যাওয়া হয় সে রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসা নিয়ে এখন সে সুস্থ্য। ২১ মার্চ সকালে এমন হৃদয় বিদায়ক ঘটনা শুনে ফরিদপুরে মানবতার ফেরিওয়ালা, ফরিদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য এ.কে. আজাদ ছুটে যান হারুনের বাড়িতে। তিনি বাড়িতে গিয়ে বসত ভিটায় ঘরের বদলে ছাই ও কয়লা দেখতে পেয়ে তিনিও আবেগ তারিত হন। তখনই তিনি ব্যাক্তিগত তহবিল থেকে ২৫ হাজার টাকা এবং সরকারি সহায়তা হিসেবে দুই বান টিন ও ৬ হাজার টাকার ব্যবস্থা করে দেন।
সংসদ সদস্য এ.কে. আজাদ পহেলা এপ্রিল সোমবার গেরদায় ঈদ সামগ্রী বিতরন অনুষ্ঠানে সেই করুন ঘটনার বর্ননা দিতে গিয়ে বলেন, আমি শেখ হারুনকে সহায়তা করেও আনন্দ পাচ্ছিলাম না। তিনি বলেন, আমি মনে মনে ভাবছি যে আমি হারুনকে সহায়তা দিয়ে চলে আসলাম, রাতে তো এসিতে ঘুমাবো কিন্তু সেই হারুন তো খোলা আকাসের নিচেই ঘুমাবে। তখন আমি সিদ্ধান্ত নিলাম যে হারুনকে ঠিক সেই আগের মত ঘর করে দিব। পরের দিনই আমি এখান কার বিদু ও প্রফেসর আলম ভাইকে বলে তার ঘর করতে সকল খরচ বহন করবো বলে জানালাম এবং খোজ খবর নিতে বললাম। তিনি বলেন, তার আগের মত করে নতুন ঘর করে দিতে আরো দুই লক্ষ টাকা প্রয়োজন, তা আমি তার হাতে তুলে দিলাম।
এসময় শেখ হারুন নতুন ঘর করতে পূর্ন সহায়তা পেয়ে আবেগ আপ্লুত কন্ঠে রমজানের বরকতময় সময়ে এ.কে. আজাদের জন্য আল্লাহর দরবারে দোয়া মোনজাত করেন। গেরদা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাকসুদ আলী বিদু বলেন, অহসায় রিকাস চালক শেখ হারুন। তার জীবিকার রিকসাটিও পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তার দুর্ঘটনার কথা শুনে জননেতা এ.কে. আজাদ তার পাশে এসে দাড়িয়েছেন। হারুনের জন্য নতুন ঘর তুলে দিয়েছেন।