আসাদুজ্জামান সর্দার, সাতক্ষীরা সংবাদদাতা।। ঈদের বাজারকে ঘিরে সাতক্ষীরার কলারোয়া সীমান্ত পথে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার ভারতীয় পন্য পাচার হয়ে আসছে। একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, কলারোয়া সীমান্ত পথে দেদারসে ভারতীয় পন্য প্রবেশ করছে। দিনের বেলা ও রাতের বিভিন্ন সময়ে সীমান্তের চোরাই পয়েন্ট গুলো দিয়ে ভারতীয় পন্য বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। ডাঙ্গা সীমান্তে ভারতের তারকাটার বেড়ার কেটে বা গেট খুলে চোরাচালানী পন্য বাংলাদেশে পাচার হয়ে আসছে। আর পানি বর্ডারে ইছামতি ও সোনাই নদী সীমান্তে এসব পন্য বাংলাদেশে আনার জন্য বেশ কিছু নৌকা নিয়োজিত রয়েছে।

সূত্র আরো জানায়, কলারোয়া সীমান্তের কেড়াগাছির চারাবাড়ি ঘাট, কুটিবাড়ি ঘাট, রথখোলা ঘাট, গাড়াখালী ঘাট, সোনাবাড়িয়ার দক্ষিণ ভাদিয়ালী ঘাট, ভাদিয়ালী তেতুলতলা ঘাট, উত্তর ভাদিয়ালী কামারবাড়ি ঘাট, রাজপুর খা-বাগানের ঘাট, চান্দা স্লুইচ গেট ঘাট, উত্তর বড়ালী ঘাট, চন্দনপুরের হিজলদী ভদ্রশাল ঘাট, হিজলদী শিশুতলা ঘাট, সুলতানপুর ঘাট, সুলতানপুর তালসারি ঘাট, গোয়ালপাড়া ঘাট, চান্দুড়িয়া ঘাট, গাড়ালবাড়ি ঘাট, কাদপুর ঘাট দিয়ে ভারতীয় পন্য পাচার হয়ে বাংলাদেশে আসছে। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে এসব ঘাট দিয়ে আসন্ন ঈদের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী আসছে। বিশেষ করে নারী-পুরুষের বাহারি নামের পোশাক অন্যতম।এছাড়াও এর মধ্যে পিয়াজ, রসুন, ছোলা, বুট, ব্যাসন, সায়াবিন বিট, আদা, লবণ, চিড়া, সুজি, জিরা, শাহী জিরা,, গোলমরিচ, দারুচিনি, লবঙ্গ, এলাচী, জায়ফল, জয়ত্রী, আঙ্গুর, আপেল, কমলা, মালটা, ন্যাশপতি, বেদানা, কিসমিস, চেরিফল, শার্ট পিস, প্যাণ্ট পিস, জিন্সের প্যাণ্ট ও শার্ট, রকমারী পাজ্ঞাবী, থ্রিপিস, টুপিস, জর্জেট শাড়ী, ওড়না, গেঞ্জী, জাঙ্গিয়া, শিশু পোষাক, বালিশের কভার, বেডশীট, তোয়ালে, সিট কাপড়, উন্নতমানের বোম্বে প্রিণ্ট শাড়ী, সাউথ ইয়ান সিল্ক, কাতান, বেনারসী, আতর, সেণ্ট, বডি লোশন, রকমারী ক্রিম, সেভিং লোশন, সেভিং ক্রীম, জুতা, স্যান্ডেল, হাড়ি, কড়াই, ষ্টীলের প্লেট, গ্লাস, বাটি, গামলা, বালতি, কড়ির কাপ, পিরিচ, প্লেট, ডিনার সেট, শিশু খেলনা, সেনেটারী ব্যাসিন, পাইপ, প্যান, বৈদ্যুতিক বাল্বের ফিলামেণ্ট, এলইডি বাল্ব, ফ্যান, ঘর ওয়ারিং সামগ্রী স্লুইচ, সিলিং রোজ, সকেট, নতুন ও পুরাতন সাইকেল, মটর সাইকেল আসছে বলে জানা গেছে।

এছাড়া সীমান্ত খোলা থাকার সুযোগে ফেনসিডিল, মদ, গাজা, আফিম, চরস, ভাং, সিদ্ধি, প্যাথেড্রিন, ইয়াবা সহ নানা প্রকার যৌন উত্তেজক সামগ্রী পাচার হয়ে আসছে। রাতে এসব পন্য সীমান্ত সংলগ্ন নির্জন রাস্তায় ট্রাক বা পিকআপ বা মাইক্রো ভরে দেশের অভ্যান্তরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সীমান্তে পন্য সরবরাহে আগত বিভিন্ন কোম্পানীর ডেলিভারী ভ্যানে, রোগীবাহি এ্যাম্বুলেন্স ভরে এসব পন্য দেশের অভ্যান্তরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে সুত্র জানায়।আবার মটর সাইকেল, ইজিবাইক বা থ্রিহুইলারে ভরে এসব পন্য বাগআচড়া বাজার, বাকড়া বাজার, কলারোয়া বাজার, কেশবপুর বাজার, রাজগঞ্জ বাজার, মনিরামপুর বাজার, নওয়াপাড়া বাজার, পাটকেলঘাট ও চুকনগর বাজারে নেওয়া হচ্ছে।

দক্ষিণ ও দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন হাট বাজার ও রাজধানী ঢাকায় পৌছে যাচ্ছে ভারতীয় পন্য। ক্রেতারা সস্তা ও চাকচিক্যময় ভারতীয় পন্যের প্রতি বেশী আগ্রহী। ফলে অবিক্রিত হয়ে পড়ছে দেশীয় পন্য। এতে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। এ’ব্যাপারে কলারোয়ার মাদরা বিজিবি কোম্পানী কমান্ডার আফজাল হোসেন বলেন, তার এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। অন্য এলাকা দিয়ে ভারতীয় পন্য আসতে পারে। ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার ও এসিল্যান্ড রিফাতুল ইসলাম এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লালটু বলেন, চোরাচালানের বিষয়ে তার কিছু জানা নেই।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে