রাশেদুল হাসান কাজল, ফরিদপুর সংবাদদাতা।।
মসলা জাতীয় ফসল পেঁয়াজ চাষে বিখ্যাত ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় হঠাৎ করে হালি পেঁয়াজের দাম অর্ধেক কমে গেছে। মাত্র একদিনের ব্যবধানে রবিবার (১০ মার্চ) সালথা উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে প্রতিমণ পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩২শ থেকে ৩৭শ টাকা করে। গতকাল সোমবার (১১ মার্চ) সেই পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে প্রতিমণ মাত্র ১৬শ থেকে ২৩শ টাকা করে। এতে অপরিপক্ব পেঁয়াজ তুলে বাজারে এনে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার জয়কাইল ও বালিয়া হাটে ঘুরে দেখা যায়, প্রচুর পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। যদিও এসব পেঁয়াজ বেশিরভাগ অপরিপক্ব। বেশি লাভের কৃষকরা ক্ষেত থেকে এসব পেঁয়াজ তুলে সরাসরি বাজারে নিয়ে এসেছেন। তবে বাজারে দাম পেয়ে মুখ মলিন করে বাড়িতে ফিরছেন তারা। কৃষকদের ধারণা, বাজারে অতিরিক্ত পেঁয়াজ আমদানি হওয়ায় ব্যবসায়ীরা দাম কমিয়ে দিয়েছে।

জয়কাইল বাজারে পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মো. খোকন ব্যাপারী বলেন, রবিবার জয়কাইল বাজারে প্রতিমণ পেঁয়াজ ক্রয় করেছি ৩২শ থেকে ৩৮শ টাকা করে। সোমবার ১৬শ থেকে ২২শ টাকা করে প্রতিমণ পেঁয়াজ ক্রয় করেছি। হঠাৎ দাম কমে যাওয়ায় অনেক ব্যবসায়ীর লোকসান হবে। কারণ আমরা পেঁয়াজ কিনে এখনো সরবারহ করতে পারিনি। যেসব পেঁয়াজ কিনেছি তা ঘরেও রাখা যাবে না। যে কারণে লাখ লাখ টাকা লোকসান হবে আমাদের।সালথার বিভাগদী গ্রামের পেঁয়াজ চাষি মহিদুল ইসলাম বলেন, বাজারে দাম ভাল হওয়ায় আমি একবিঘা জমির পেঁয়াজ আগাম তুলেছি। সেখান থেকে ২০ মণ পেঁয়াজ বাজারে এনেছিলাম। কিন্তু বাজারে এসে দেখি পেঁয়াজের দাম অর্ধেক নেই। তাই আমি পেঁয়াজ বিক্রি না করে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। তবে এসব পেঁয়াজ বেশিদিন ঘরেও রাখা যাবে না। এভাবে হঠাৎ দাম কমে যাওয়ায় আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেলাম। বালিয়া হাটে পেঁয়াজ নিয়ে আসা নুর হোসেন বলেন, বাজারে আজকে অনেক পেঁয়াজ উঠেছে। যে কারণে দাম অর্ধেক কমে গেছে। আমি তিন মণ পেঁয়াজ এনেছিলাম। কি করব, বাধ্য হয়েই অর্ধেক দামে পেঁয়াজ বিক্রি করে গেলাম। প্রতিমণ পেঁয়াজ মাত্র ১৬শ টাকা করে বিক্রি করেছি। দাম যতই কম হক, বিক্রি করে বাজার-সদাই তো করা লাগবে। নইলে না খেয়ে থাকতে হবে।

উল্লখ্য, বেশ কিছুদিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন বাজারে পেঁয়াজের দাম অতিরিক্ত ছিল। প্রতিমণ পেঁয়াজ ৩ হাজার ২০০ থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। যে কারণে পেঁয়াজ চাষে বিখ্যাত সালথার চাষিরা ক্ষেত থেকে অপরিপক্ব হালি পেঁয়াজ উত্তোলন করে বাজারে নিয়ে বিক্রি করা শুরু করেছিলেন। বর্তমান যেসব পেঁয়াজ ক্ষেত থেকে তোলা হচ্ছে, আগামী ১৫ থেকে ২০ দিন পর এসব পেঁয়াজ তুললে পরিপক্ব ও শক্তিশালী হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে