রাকিবুল ইসলাম রাকিব,সিরাজগঞ্জ সংবাদদাতা।। সিরাজগঞ্জ শহীদ এম. মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শিক্ষক ডা. রায়হান শরিফের বিরুদ্ধে শ্রেণিকক্ষে পিস্তল, টেবিলে ছুরি, শিক্ষার্থীদের ফেল করিয়ে দেবার ভয়, ক্যাম্পাস প্রাঙ্গনে শিক্ষকের মাদকসেবন, ছাত্রীদের ফোনে কুপ্রস্তাবসহ এমন ডজন খানেক হয়রানির অভিযোগ এনে কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানালেও পদক্ষেপ না নেয়ার অভিযোগ উঠছে। গতকাল মঙ্গলবার (৫ মার্চ) সকালে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন চলাকালে এসব অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা বলেন, শিক্ষক রায়হান শরীফ ক্লাসে গল্প-গুজব করেই তিন ঘণ্টা পার করে দিতেন। কখনো কখনো পিস্তলের ভয় দেখিয়ে জোর করে বিভিন্ন কাজ করে নিতেন। কথা না শুনলে নম্বর কম দেবেন বলে হুমকি দিতেন। অনেক শিক্ষার্থীকে ফেল করানোর ভয়ভীতি দেখাতেন। শ্রেনিকক্ষে টেবিলে পিস্তল-ছুরি রেখে ক্লাস নিতেন। কখনো কখনো গুলি না ঢুকিয়ে তাদের দিকে পিস্তলের ট্রিগার টানতেন।এছাড়া তিনি কু-প্রস্তাব ও মেসেজ দিতেন। মেয়েদের সব সময় হয়রানি করতেন। এসব লজ্জার বিষয় কি সব জায়গায় বলা যায়। তারপরও কলেজ কর্তৃপক্ষকে মৌখিকভাবে জানানো হলেও চুপ ছিলেন অধ্যক্ষ। তিনি ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেননি। এ কারণে তিনি বহাল তবিয়তে চাকরি করে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ আমিরুল হোসেন চৌধুরী বলেন, কী কারণে এ ঘটনা ঘটল তা বলতে পারব না। শিক্ষার্থীরা লিখিতভাবে আমাকে কিছুই জানায়নি। পিস্তলের লাইসেন্স আছে কি না এ বিষয়ে রায়হান শরীফকে জিজ্ঞাসা করেছি। তিনি জানান, তার পিস্তলের লাইসেন্স আছে। এখন জানতে পেরেছি পিস্তলের লাইসেন্স নেই। তিনি বলেন, শ্রেণিকক্ষে পিস্তল নিয়ে ঢোকার বিষয়ে আমি ব্যক্তিগতভাবে নিষেধ করেছি।কিন্তু তিনি কোনো কথা শোনেননি। পরে তাকে প্রথমবার শোকজ করা হয়েছে। এরপর তাকে দ্বিতীয়বার শোকজ করা হলেও তিনি এ বিষয়ে কোনো কর্ণপাত করেননি। অবশেষে আমরা প্রক্রিয়ার মধ্যে ছিলাম তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার। এর মধ্যেই এ ঘটনা ঘটে গেল। ডা. রায়হান শরীফের এসব আচরণ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছিল কি না জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
এদিকে তদন্ত কমিটির প্রধান ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. বায়জিদ খুরশীদ রিয়াজ বলেন, রায়হান শরীফের আচরণ সর্ম্পকে মেডিকেল কলেজ থেকে লিখিত ও মৌখিকভাবে কোনো অভিযোগ পাইনি বা আমাদেরও দেওয়া হয়নি। শিক্ষার্থীকে গুলি করার বিষয়ে আমরা তদন্ত শুরু করেছি, সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলা হবে। আপাতত গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমাল ভালো আছে, তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আমরা তদন্ত করছি, তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। তদন্তে ওই ডাক্তার দোষী প্রমাণিত হলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।