আনোয়ার হোসেন, খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়ির গুইমারাতে সড়ক জনপথ (সওজ) সরকারি জমি দখল করে অবৈধ স্থাপনা তৈরি করছে একটি প্রভাবশালী মহল। খাগড়াছড়ি—চট্রগ্রাম মহাসড়কের জালিয়াপাড়া বাজার হতে গুইমারা বাজার পর্যন্ত মহাসড়ক লাগোায়া জমি ও পিলাক খালের জমি দখল করে আধ—পাকা টিনের ঘর ও বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে।
“মহাসড়ক আইন—২০২১ এর ২৮ নং আইনের ২ নং ধারার ১৭ এর উপধারায় উল্লেখ আছে, মহাসড়কের উভয় পার্শে ভূমির প্রান্তসীমা (জরমযঃ ড়ভ ডধু) হইতে ১০ মিটার সংরক্ষন রেখা হবে। সরকারের পুর্বানুমতি ব্যতিত মহাসড়কের নিয়ন্ত্রন রেখার মধ্যে কোনো অবকাঠামো নির্মাণ, হাটবাজার বসানো বা ব্যবসায়ীক
উদ্দেশ্যে মহাসড়কের কোনো অংশ ব্যবহার করা যাবেনা । মহাসড়কের ১০ মিটার বা ৩৩ ফুটের মধ্যে কোন স্থাপনা নির্মাণে বিধি—নিষেধ থাকলেও অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ হচ্ছেনা। আইন থাকলেও আইনের যেন থোরাই তোয়াক্কা করেন প্রভাবশালীরা । ২০০০ সালে প্রণীত প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন’ অনুযায়ী নদী, খাল বা জলাশয়, বৃষ্টির পানি ধারণ করে এমন কোনো ভূমির আকার পরিবর্তন করা যাবে না বলা হলেও গুইমারাতে খালের জমি দখল করে বহুতল ভবন ও স্থাপনা নির্মাণ করছেন অনেকে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মশিউর রহমান তারেক ও কানু চৌধুরী নামের প্রভাবশালী গুইমারা পোস্ট অফিসের পাশে মহাসড়ক ও খালের জমি দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন। মহাসড়কের উপর সিমেন্টের বস্তা স্তুপ কেও রাখা হয়েছে। নির্মানাধীন ভবনটির সামনের অংশে সড়ক ও জনপথের (সওজ) জমির প্রান্তসীমা থেকে ১০ ফুটেরও বেশী জমি অবৈধভাবে দখল করা হয়েছে। সওজের ভুমির দখলের পাশাপাশি ভবনের পিছন পাশে পিলাক খালের কিছু অংশ দখল করে বহুতল বানিজ্যিক ভবন নির্মাণ চলমান আছে। গুইমারা বাজার সংলগ্ন ব্রিজের পাশে ও ব্রিজের নিচে কয়েকটি স্থানে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা মহসড়কের দুই পাশে সরকারি জায়গা দখল করে আধা পাকা ঘর, টিনের ঘর, দোকান ও মার্কেট নির্মাণ করেছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়ক জনপথ (সওজ)র কতিপয় কর্মকতাদের অনৈতিক সুবিধা দিয়ে বহুতল ভবনসহ স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে।
সরকারি জমি দখলের বিষয়ে মশিউর রহমান তারেক জানান, এই জমিটি বাজার ফান্ড প্রশাসকের জমি। সওজ ও খালের জমিও দখল করা হয়নি। মহাসড়কের প্রান্তসীমা থেকে ১০ মিটারের মধ্যে স্থাপনা তৈরি করছেন (সওজ) এর অনুমোদন আছে কিনা জানতে চাইলে অনুমোদন নেই বলেন। (সওজ) সড়ক, উপবিভাগ—১ ও গুইমারা সড়ক বিভাগের উপ—সহকারী প্রকৌশলী রনেন চাকমার কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি জানান, বুধবার মহাসড়কের সীমানাটি পরিমাপ করা হয়েছে। মহাসড়কের মধ্যখান হইতে উত্তর পাশে ৩১ ফুট ও দক্ষিন পাশে ৪২ ফুট, প্রান্তসীমা থেকে উত্তর পাশে ৯ ফুট ও দক্ষিন পাশে
১৫ ফুট দুরে ভবনটি নির্মাণ করা হচ্ছে। ভবনটি যদি সওজের জমিতে হয় তাহলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।গুইমারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রক্তিম চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খাগড়াছড়ি সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাকসুদুর রহমান কর্মকতাদের অনৈতিক সুবিধা নেয়ার বিষয়টি অস্বিকার করে বলেন, ভবনটি সওজের সীমারেখার বাইরে নির্মাণ করা হচ্ছে। আমরা সার্ভে করব। তখন যদি নির্মাণাধীন ভবনটি সরকারি সীমানায় থাকে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। মহাসড়কের প্রান্তসীমা থেকে ১০ মিটারের মধ্যে ভবন নির্মাণ সওজের সাীমা রেখার বাইরে কিভাবে প্রশ্ন করলে তিনি জানান এই সড়কটি “মহাসড়ক আইন—২০২১” আওতাই পরেনা। সড়কটি গেজেটেট না। তিনি আরও বলেন, জনগনের পক্ষে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন আমরা ব্যবস্থা নেব।
জেলা ডেস্ক ।। বিডি টাইমস নিউজ