জহির সিকদার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি ।। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলার প্রায় সবগুলো বাজারে সব ধরণের নিত্যপণ্যের দামই বেড়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে ব্রয়লার মুরগি ও কাঁচামরিচের।
গত এক মাসের ব্যবধানে কেজিতে মুরগির দাম বেড়েছে ৫০ থেকে ৮০ টাকা। কৃত্রিম সংকট তৈরি করে মুরগির দাম বাড়ানো হয়েছে বলে দাবি করছেন খুচরা বিক্রেতারা। জেলা শহরে কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকায়। প্রতি কেজি সোনালি মুরগি ৩‘শ টাকা, ব্রয়লার ১৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লেয়ার লাল ও সাদা জাতের মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২২০ ও ২৪০ টাকা দরে। দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে আগের দর ৩৫০ টাকায়। জেলার শহরে ফারুকী বাজারের মুরগি বিক্রেতা সাজু মিয়া বলেন, গত দুই মাসের বেশি সময় ধরে মুরগির দাম বাড়ছে। বাজারে মুরগির সংকট থাকায় দাম বেড়েছে। আরো বলেন, মুরগির খাবারের দাম বেড়েছে। দু’মাস আগে যে খাবার ৩১ টাকায় কেনা যেতো সেটি এখন ৪৩ টাকায় কিনতে হচ্ছে। এছাড়া মুরগির বাচ্চার দামও বেড়েছে। বাচ্চা পালনে খরচ বাড়ায় মুরগির দাম কিছুটা বাড়তি, সংকট নিরাসনে ফিডের দাম নির্ধারন করার দরকার। এদিকে মুরগির দামের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম। জেলা শহরের কালীবাড়ি মোড়ে অস্থায়ী সন্ধ্যায় কাঁচাবাজারে গেলে আলাপ হয় সবজি বিক্রেতা নজরুল ইসলামের সাথে| সবজির দাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১ জোড়া ছোট ফুলকপি ৯০ টাকা, মিষ্টি কুঁমড়া বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা, পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা, গাজর ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, লাল শাক ৪৫ টাকা, পালং শাক ৬০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, ঝিঙে ৫০ টাকা, শিম ১০০থেকে ১২০ টাকা, টমেটো ৯০ থেকে১১০ টাকা, কাঁচামরিচ ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, তিতা করলা ৮০ টাকা, লতি ৭০ টাকা, মুখি ৫০টাকা মোলা ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, ধনেপাতা ২০০ টাকা কাঁচামরিচ ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, বেগুন ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মুদি দোকানি নিত্যপণ্যের পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী শেমবু (শম্বু) সাহার সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, বাজারে কোনো পণ্যের সরবরাহ কমতি নেই। তারপরও সবকিছুর দাম বেড়ে চলেছে। পেঁয়াজ এল,সি ৪৭থেকে৫০ দেশি ৬০ টাকা, খোলা সোয়াবিন তেল ১৫৫, বোতলজাত প্রতিলিটার ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা, চিনি ৭৮-৮০ টাকা, মোটা চাল ৪৮ টাকা, চিকন চাল ৬২-৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আগে ২ লাখ টাকা দিয়ে এক ট্রাক মাল আনতে পারতাম এখন দুই ভ্যান গাড়ি মাল আনতে হয়। আমার দোকানে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ক্রেতারা আসে দাম শুনতেই হিমশিম খেয়ে চমকে উঠে অনেক ক্রেতারা । দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে ক্রেতারা বলে এই দ্রব্যমূল্যের দাম কবে কমবে, যার কেনার দরকার সে না পেরে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আনন্দ বাজার, ফারুকী বাজার, কাউতলী বাজার, বউ বাজার, মেড্ডা বাজারের মাছের বাজারে গেলে বাজারগুলোতে বিভিন্ন জাতের মাছের সমাহার দেখা যায়। এখন মাছের মৌসুম হওয়ার কারনে দাম আগের চাইতে একটু কম রয়েছে।
নিত্যপণ্যের বাজার ঊর্ধ্বগতি হওয়ার কারণে দিনমজুর থেকে শুরু করে প্রায় সকল শ্রেণির মানুষ অতিশয়কষ্টে দিনযাপন করতে হচ্ছে। এভাবে বাজারের দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতি চলতে থাকলে মানুষ খেয়ে বেঁচে থাকাই দায় হয়ে দাঁড়াবে। চাকরিজীবীদের বেতন ও দিনমজুরদের মজুরি বৃদ্ধি না করলে। এই দ্রব্যমুল্যর দাম না কমলে সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছে ভুক্তভোগীরা। আশুগঞ্জেও মুরগীসহ সবধরনের শাকসবজির দাম বাড়তি।
ব্রাহ্মনবাড়িয়া নিউজ ডেস্ক ।। বিডি টাইমস নিউজ