মনের ভাব প্রকাশের একমাত্র মাধ্যম হল ভাষা। এই ভাষার জন্য হয়েছে সংগ্রাম।কিন্তু নানা অবহেলার কারনে বিশ্বে প্রতি তিন দিনে হারিয়ে যাচ্ছে একটি করে ভাষা। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের গবেষণা বলছে বাংলাদেশের ৪১টি ভাষার মধ্যে ৩৩টির লেখ্য রূপ নেই। গবেষকেরা বলছেন, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মাতৃভাষা সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া না হলে আগামী শতাব্দীতে এর বেশিরভাগেরই অস্তিত্ব থাকবে না।
পার্বত্য চট্টগ্রামের আলী কদমে রেং মিটচা ভাষায় কথা বলেন মাত্র ৩৫ জন মানুষ। লেখ্যরূপ না থাকায় এই ভাষা জানা শেষ মানুষটির বিদায়ের সাথে সাথে বিলুপ্ত হবে একটি জাতির ভাষার ইতিহাস।
গবেষকেরা বলছেন, ভাষার অধিকার নিয়ে লড়াইয়ের দেশেই ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মাতৃভাষা বিপন্ন। দেশের ৪১টি ভাষার মধ্যে মাত্র আটটির নিজস্ব লিপি রয়েছে। ফলে বাকি ৩৩টি ভাষা রক্ষায় ব্যাকরণ কিংবা অভিধান তৈরী করা সম্ভব হচ্ছে না। এরই মধ্যে খাড়িয়া, ঠার, হোদি, ডালু, বর্মণ, সৌরা ভাষা হারিয়ে গেছে। কিছু কিছু ভাষা পরিণত হয়েছে মিশ্র ভাষায়। আদিবাসী নেতারা বলছেন, দেশে বাংলা একাডেমী থাকলেও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় কোনো কর্তৃপক্ষ নেই।গবেষকদের দাবি স্পেনের আলতামিরায় পাওয়া ১২ হাজার বছর আগের এই ছবি-ই মানুষের প্রথম লিপি। ইউনেস্কোর সবশেষ গবেষণায় বিশ্বের প্রায় আড়াই হাজার ভাষাকে বিপন্ন চিহ্নিত করা হয়েছে। যার বেশিরভাগই ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ভাষা। তবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট বলছে এ সংখ্যা আরো অনেক বেশি।
ভাষা বিজ্ঞানীরা বলছেন, মাতৃভাষা মানুষের অবচেতনে থাকে তাই প্রতিটি ভাষিক সম্প্রদায়ের শিশুদের নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ওই ভাষায় শিক্ষা অর্জনের সুযোগ দেয়া উচিত। সরকার এ বছরই প্রথম ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর পাঁচটি মাতৃভাষায় প্রাক-প্রাথমিক স্তরে পাঠ্যবই দিয়েছে।
নিউজ ডেস্ক, বিডি টাইমস নিউজ