ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদদাতাঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরসহ নয়টি উপজেলায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৫৮জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। শুধু আখাউড়া উপজেলাতেই ১৪ জন আক্রান্ত হন। নবীনগরের একই পরিবারের ১২জন সহ ১৬ জনের পর আখাউড়া ‍উপজেলাতেই করোনা আক্রান্ত সংখ্যা বেশি। অথচ করোনা পরিস্থিতিতে আখাউড়াতে শুরু থেকেই স্বাস্থ্য বিভাগের গাফিলতির অভিযোগ উঠে। এবার খোদ হাসপাতাল প্রধান চেক আনার কথা বলে দুই দিন ধরে ঢাকায় অবস্থান করে সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন। যথাযথ সময় তাকে না পেয়ে অভিযোগ করেন অনেকেই। প্রতি সপ্তাহেই ঢাকার বাসায় চলে যান। ব্যবহার করেন করোনা পরিস্থিতির সময় বরাদ্দ পাওয়া সরকারি গাড়ি।

আখাউড়ায় একজন অফিস সহায়ক (পিয়ন)কে দিয়ে করোনার নমুনা সংগ্রহের বিষয়টি সমালোচনার জন্ম দেয়। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি নমুনা সংগ্রহে অনাগ্রহ প্রকাশ করার পরও তার বিরুদ্ধে শুরুতে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় হাসপাতাল প্রধানের বিরুদ্ধেও গাফিলতির অভিযোগ উঠে। এসব বিষয় জানতে চাইলে সাংবাদিকদের জানার দরকার নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন। এরপর থেকে তিনি সাংবাদিকদেরকে এড়িয়ে চলেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. রাশেদুর রহমান বুধবার সকালে সরকারি গাড়িতে করে ঢাকায় যান। হাসপাতাল সংশ্লিষ্টদেরকে তিনি বলে গেছেন, ইতিমধ্যেই সম্পন্ন করা একটি ট্রেনিংয়ের চেক আনার জন্য তিনি ঢাকায় যাচ্ছেন। এছাড়া গাড়িতে কাজ করাবেন। শুক্রবার বিকেলে তিনি আসবেন বলে জানান। ইউএইচএফপিও-ই হাসপাতালের প্রধান।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত কয়েকদিন ধরে আখাউড়া হাসপাতালের বহিবির্ভাগে রোগী বেড়ে গেছে। এছাড়া নমুনা সংগ্রহও করা হচ্ছে। গত দুইদিন গড়ে ১০০ এর বেশি রোগী এসেছেন।  হাসপাতালে গড়ে ১৫ জনের মতো রোগী ভর্তি আছেন। বৃহস্পতিবার(০৭মে) দুপুর নাগাদ পাঁচজনের করোনার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সব মিলিয়ে ব্যস্ততা বেড়েছে হাসপাতালে কর্মরতদের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, করোনা পরিস্থিতিতে ডা.রাশেদুর রহমান আগেও ঢাকার বাসায় গেছেন। কোয়ারেন্টিন থেকে রক্ষা পেতে তিনি বিষয়টি চাপিয়ে যান। হাসপাতালে কর্মরতদের মধ্যে এ নিয়ে ক্ষোভ আছে। কিন্তু এ বিষয়ে তাঁরা মুখ খুলতে চাইছেন না। এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. মো. একরাম উল্লাহ বিডি টাইম্‌স নিউজকে বলেন, ‘একটি জরুরি কাজে ঢাকায় গেছেন বলে আমাকে মৌখিকভাবে তিনি জানিয়ে গেছেন। ওনার বদলে আরেকজন সংশ্লিষ্ট দায়িত্ব পালন করছেন।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘২৬ এপ্রিল ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে যোগদানের পর আমি কোথাও যেতে পারিনি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় করোনার মধ্যেও কর্মশালার ভাতা আটকে রেখেছেন আখাউড়ার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা
করোনার মধ্যেও প্রায় দুই মাস আগে হওয়া হাম–রুবেলার কর্মশালায় অংশ গ্রহণের সম্মানির ভাতা আটকে রেখেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা। অংশ গ্রহণকারিরা এ নিয়ে বারবার তাগাদা দিলেও কোনো ধরনের সাড়া পাচ্ছেন না।এ নিয়ে  সংশ্লিষ্টদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাম–রুবেলা ক্যাম্পেইন সফলে মার্চ মাসে স্বাস্থ্য বিভাগ সংশ্লিষ্ট ৬৭জনকে নিয়ে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। ওই কর্মশালায় অংশ গ্রহণ ও যাতায়াত হিসাবে সরকার নির্ধারিত ভাতা ইতিমধ্যেই আখাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসেছে। তবে ওই ভাতা এখনো দেওয়া হচ্ছেনা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অংশগ্রহণ কারি অভিযোগ করেন, অংশগ্রহণকারি সকলের  ভাতার পুরো টাকা আসার খবরে তারা উপজেলা  স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগাযোগ করেন। কিছু দিন পর ডেকে তাদেরকে ভাতা দেওয়া হবে বলে জানানো হয়।কিছুদিন পর গেলে জানানো হয়, ইউএইচএফপিও এখনই ওই ভাতা দিতে চাচ্ছেন না। ওনি সিদ্ধান্ত দিলে দেওয়া হবে। করোনা পরিস্থিতিতে এ ভাতা পেলে যেখানে স্বাস্থ্য কর্মীরা উৎসাহ পাবেন,সেখানে ওটা আটকে রেখে তাদেরকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। এর পিছনে অন্য কোন উদ্দেশ্য ওথাকতে পারে। যোগাযোগ করা হলে হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট কর্মচারী অরুন সাহা বলেন,ভাতার বিল এসেছে জানি।তবে এ বিষয় টি অফিস সহকারী অলক সাহা দেখভাল করছেন।ওনি বিষয় টি ভাল বলতে পারবেন।অফিস সহকারী অলক সাহা বলেন,ভাতার চেক এসেছে। স্যার,(ইউএইচএফপিও)বলেছেন, করোনা পরিস্থিতির পর এটা দিয়ে দিবেন। এখন দিতে সমস্যা কি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,বিষয় টি নিয়ে স্যারের সঙ্গে কথা বলবো।

জহির  সিকদার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
নিউজ ডেস্ক ।। বিডি টাইম্‌স নিউজ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে