ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদদাতাঃ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন থেকে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি করছে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত আশুগঞ্জের কয়েকজন শিক্ষার্থী। ‘বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ, আশুগঞ্জের পক্ষ থেকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ইতোমধ্যেই উপজেলার নিন্ম আয়ের মানুষের মাঝে বিনামুল্যে বিতরণ করা শুরু হয়েছে।

আশুগঞ্জ সার কারখানা স্কুল ও কলেজের ল্যাবের সহয়োগিতায় গত মঙ্গলবার দুপুর থেকে তারা এ হ্যান্ড স্যানিটইজার তৈরি শুরু করে। পাশাপাশি এ শিক্ষার্থীদল উপজেলার বিভিন্ন জন গুরুত্বপুর্ণ স্থানে জীবানু নাশক স্প্রে করাসহ জনসচেতনতা বাড়াতে প্রচারণা করছে। দেশের এ ক্রান্তিলগ্নে তরুণ শিক্ষার্থীদের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সচেতনমহল।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশে করোনা ভাইরাসের প্রার্দুভাব ও কয়েকজন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যাপক চাহিদা বাড়ে। কয়েক দিনের ব্যবধানে এ পণ্যের দাম বহুগুণ বেড়ে যায়। কখনো কখনো টাকা দিয়ে তা মিলছেনা। এ অবস্থায় বিত্তশালীরা তা কিনতে পারলেও নিন্ম আয়ের শ্রমজীবি মানুষ  তা ক্রয় করতে পারছেন না। এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় বাড়িতে আসা ১০-১২ জন শিক্ষার্থী হ্যান্ড স্যানিটাইজাার তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করে। তাদের এ উদ্যোগকে বাস্তবায়নে রুপ দিতে কারিগরি সহায়তা দিতে আশুগঞ্জ সার কারখানা স্কুল ও কলেজ এবং অর্থ দিয়ে এগিয়ে আসেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাক্তন ছাত্র মোঃ আব্দুল আজিজ এবং বেশ কয়েকজন তরুণ সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতা। আশুগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতির হাতে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের নমুনা তুলে দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

উদ্যোক্তারা জানান, প্রাথমিক ভাবে তারা ৫-৬শ কৌটা হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি করবে। পাশপাশি তারা উপজেলার বিভিন্ন জনগুরুত্বপুর্ণ স্থানে জীবনাশক ঔষধ ছিটানো ও মাইকিং করে জনগণকে সচেতনও করতে কাজ কওে যাচ্ছে।মঙ্গলবার বিকালে আশুগঞ্জ সার কারখানা কলেজে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, শরীরে এপ্রোন, মাথায় টুপি ও হাতে গ্লাভ পরে একদল তরুণ-তরুণী তৈরি করছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার। কথা বলে জানা গেছে, তারা কেউ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, কেউ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যাল, কেউ কুমিল্লা বিশ্ববিদালয় কেউবা অন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়নের ছাত্র খায়রুল কবীর অভি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নের ছাত্র দ্বীন মোহাম্মদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় আমরা বাড়িতে এসেছি। দেশের এ ক্রান্তি লগ্নে আমরা বন্ধুরা মিলে সাধারণ মানুষের জন্য কিছু করতে যাচ্ছি। হ্যন্ড স্যানিটাইজার তৈরি মুল উপাদন হল এলকোহল, গ্লিসারিন, এলোভেরা, লেমন ওয়েল, হাইড্রোজেন পার অক্সাইড। এলকোহল ছাড়া অন্য উপাদান আমারা নিজেরা কিনেছি। এলকোহল ও ল্যাব সহযোগিতা দিয়ে সার কারখানা কর্তৃপক্ষ আমাদের সহযোগিতা করেছন। এ উদ্যোগের সাথে অন্যান্যদের মাঝে যারা জড়িত রয়েছেন তারা হলেন, চট্টগ্রাম বিশ্বদ্যিালয়ের সাবেক ছাত্র বর্তমানে ব্যাংকার আরিফ, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রী ও বর্তমানে শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ফাতেমা বেগম হীরামনি, কুমিল্লা বিদ্যালয়ের মৈত্রি মনির সামিয়, আহাদ ফারহান, বিজিএমইএ বিশ্বদ্যিালয়ের ছাত্র আহসান হাবিব, জগন্নাথ বিশ্বদ্যিালয়ের মাহিতুল ইসলাম, ঢাকা কলেজের আব্দুল্লাহ রোহান, তিতুমীর কলেজের জহিরুল হক, সাইকের নাফিস খান ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের হাবিবুর রহমান। এব্যপারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র বর্তমানে ব্যবসায়ী মোঃ আব্দুল আজিজ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক ছোট ভাই-বোন আমার কাছে সহযোগিতা চাইলে আমি আমার সাধ্যমতো সহয়োগিতা করি।

এব্যাপারে আশুগঞ্জ সার কারখানার সিবিএ‘র সাধারণ সম্পাদক মোঃ কবীর আহম্দে বলেন, আমি তরুণ শিক্ষার্থীদের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ সার কারখানার অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক(প্রশাসন) এটিএম বাকি বলেন, তারা আমাদের কাছে ল্যাব ও অন্যান্য কিছু সুবিধা চায়। ভাল কাজে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে তাদের সহযোগিতা করতে পেরে নিজেও আনন্দিত।

জহির সিকদার
নিউজ ডেস্ক ।। বিডি টাইম্‌স নিউজ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে