সরকারি ক্রয় নীতিমালা-পিপিআরকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে মগবাজার মৌচাক ফ্লাইওভার। ঠিকাদার নিয়োগ, গাড়ি কেনা এমনকি কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি গঠনের ক্ষেত্রেও মানা হয়নি আইন। এসব কারণে চার বছরে প্রকল্পের খরচও বেড়েছে ৫৭ শতাংশ। এসব ঘটনাকে বড় অনিয়ম বলছেন বিশ্লেষকরা। আর এসব ব্যাপারে কোনো কথা বলতে রাজি হননি প্রকল্প পরিচালক।

যানজটকে নিত্যসঙ্গী করে ঢাকার মানুষ স্বপ্ন দেখে উড়াল সেতুতে চড়ার। কিন্তু সময় যতো যায়, সে স্বপ্নকে আরো দূরে ঠেলে দেয় মগবাজার মৌচাক প্রকল্প। কেননা, এখানকার বাস্তবতা হলো, সময় যায় ঠিকই, কিন্তু কাজ আর অজুহাত যেন থামে না। এই প্রকল্পের ঠিকাদার নির্বাচন করতেই আইন ভাঙা হয়েছে কঠোরভাবে। যেমন, পাঁচ নম্বর প্যাকেজের ভিত্তি ও আংশিক অবকাঠামো নির্মাণের কাজ পায় তমা কনস্ট্রাকশান। যার অর্থমূল্য ৭০ কোটি টাকার বেশি। কিন্তু দরপত্রের শর্ত ও চুক্তিতে দেখা যায়, এ ধরনের কাজ কেবল সেই প্রতিষ্ঠানকেই দেয়া যেতে পারে, যাদের অন্তত একটি ফ্লাইওভার, সেতু অথবা ৭৫০ মিলিমিটার ব্যাসের পাইলিং করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। অথচ, এসবের কোনোটিই সে সময় ছিল না তমা কন্সট্রাকশনের। ফলে, এখানে পিপিআর লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে উল্লেখ করে নিরীক্ষা বিভাগ। যদিও এ বিষয়ে সরাসরি কোনো ব্যাখ্যা দেননি ওই প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তা।

এখানেই শেষ নয়, প্রকল্পের চার ও ছয় নম্বর প্যাকেজে অতিরিক্ত নির্মাণ কাজের অজুহাতে দুই যৌথ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বেশি নিয়ে যায় ৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো, নাভানা সিমপ্লেক্স এবং এমসিসিসি-এসইএল। আর উন্নয়ন প্রস্তাবনায় উল্লেখ না থাকলেও, সোয়া দুই কোটি টাকার গাড়ি কিনে অপচয় করা হয় প্রকল্পের টাকা। কেবল তাই নয়, ২০১১ সালের মূল প্রস্তাবনায় প্রকল্প ব্যয় ৭৭২ কোটি টাকা হলেও , নানা অজুহাতে ২০১৫ সালে তা দাঁড়ায় ১ হাজার ২১৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে নকশা ভুল হওয়ায় তার পেছনে গচ্চা যায় ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা। আর এসব ব্যাপারে সাড়া মেলেনি প্রকল্পের পরিচালকের কাছ থেকেও।

প্রকল্পের কারিগরি কমিটিও নির্বাচন করা হয়েছে পিপিআর অমান্য করে। এমনকি, এই উড়াল সেতু বাস্তবায়নের আগে নেয়া হয়নি ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন অথরিটি-ডিটিসিএর অনুমোদনও।

নিউজ ডেস্ক, বিডি টাইমস নিউজ ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে