প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর নজরদারি বাড়াতে হবে। সজাগ থাকতে হবে অভিভাবক ও শিক্ষকদের। রোববার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, অতীতে বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময় সন্ত্রাসের যে বীজ বপন করা হয়েছিল, এখন তারই বিস্তার ঘটেছে। ঈদের ছুটির পর প্রথম কার্যদিবসেই নিজ কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির পাশাপাশি উঠে আসে বিভিন্ন ক্ষেত্রে গৃহীত সরকারের নীতিমালাগুলো।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে আসে সম্প্রতি দেশে ঘটে যাওয়া বর্বরোচিত জঙ্গি হামলা প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, অতীতের সরকারগুলো সন্ত্রাসবাদের যে বীজ বপন করেছে, তাই এখন বিস্তার লাভ করছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেখছি সারা বিশ্বে জঙ্গিবাদ ছড়িয়ে পড়ছে। বাংলাদেশ এর থেকে কিন্তু খুব বেশি দুরে ছিল না। কারণ, এই বাংলাদেশে আমি নিজেই গ্রেনেড হামলার শিকার। এই ধরনের জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসীদের যারা সৃষ্টি করে রেখে গেছে, যারা তৈরি করে রেখে গেছে, একবার বীজ বপন করলে সেটা সহসা উৎখাত করা যায় না।’ এ সময়, গুলশান হামলার ঘটনায় বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে নজরদারি বাড়াতে হবে।

গুলশানের জঙ্গি হামলা ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘গোয়েন্দা সংস্থাগুলো রিপোর্ট দিচ্ছিল, আমরা খুব সচেতনও ছিলাম। কিন্তু গুলশানে যে ঘটনাটা ঘটল- আমার মনে হয় পৃথিবীতে কোনো দেশ এত দ্রুত সময়ে এই ধরণের একটা ঘটনা ঘটলে সেখান থেকে জীবন্ত মানুষ উদ্ধার করা- এটা কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন দেশ পারেনি। কোনও উন্নত দেশও পারেনি।’ পরে অভিভাবকের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘উচ্চ শিক্ষিত পরিবারের ছেলেরা, ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াশুনা করে। আমরাতো ভাবি যে তাদের মন অনেক উদার হবে। তারা সত্যিকারের সঠিক ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞান নেবে কিন্তু তারা যে ধর্মান্ধ হয়ে যাবে সেটি কখনও আমরা ভাবতে পারিনি।’ এছাড়াও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়াকে দুঃখজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, কারা তাদের বিপথগামী করছে তা খুঁজে বের করতে হবে। তিনি আরও বলেন, ‘তাদেরকে বিভ্রান্তির পথে কারা নিয়ে যাচ্ছে? ওই সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক যারা তাদের ভিতরেও কারা আছে যে শিক্ষার্থীদের বিপথে নিয়ে যাচ্ছে?’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ জন্য ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর নজরদারি বাড়াতে হবে। সজাগ থাকতে হবে অভিভাবক ও শিক্ষকদের, শত বাধা ডিঙ্গিয়ে হলেও জঙ্গিবাদ মুক্ত দেশ গড়বে সরকার’। বাংলাদেশকে অভিশাপ মুক্ত করতে হবে আর সেটি আমরা করবোই।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে