বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ওরাঁও জনগোষ্ঠী বসবাস করে আসছে যুগ যুগ ধরে। তবে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাই বসবাস করে সমতল অঞ্চলে। ওরাঁওদের আদিভাষা কুরুখ। তবে দেশের বেশির ভাগ সংখ্যাই সাদরি ভাষায় কথা বলে।ওরাঁও জনগোষ্ঠীর রয়েছে নিজস্ব ভাষা, কৃষ্টি-কালচার, রীতিনীতি, আচার, সংস্কৃতি, পার্বণ, খাদ্য, বাড়ি-ঘর তৈরির নিজস্ব কৌশল, প্রথা, বিশ্বাস, নিজস্ব নাচ-গান, সামাজিক আইন ব্যবস্থা, মন্ত্র, আদি কাহিনী, সাংস্কৃতিক ভিন্নতা, ধর্মীয় বিশ্বাস ইত্যাদি।

আদি ধর্ম সনাতন হলেও কালক্রমে অনেকেই খ্রিষ্টান ও বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষিত। তবে আজ সহঅবস্থান রয়েছে যা আদি ধর্মের আচার অনুষ্ঠানে এর সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। শান্তি ও প্রবল বিশ্বাসী এই জনগোষ্ঠী রাষ্ট্রের মূলধারা জনগোষ্ঠীরর সাথে তাল মিলিয়ে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সহ অন্যান্য কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করলেও – রাষ্ট্রের চরম লাঞ্ছনা, বঞ্চনা, নিপীড়ক, নির্যাতন, ধর্ষণ, ভূমি জবরদখল, ঘরবাড়ি থেকে উচ্ছেদ থেকে আজও মুক্তি লাভ করেনি। এ অবস্থানের পরিবর্তন না হলে রাষ্ট্রে এ জনগোষ্ঠী জায়গা জাদুঘরে কিংবা ইতিহাসের পাতায় দেখা যাবে। রাষ্ট্র আজও এই জনগোষ্ঠীর ইতিহাস, কৃষ্টি-কালচার, রীতিনীতি, সংস্কৃতি ইত্যাদি সংরক্ষণ করতে সদিচ্ছা দেখায়নি।ওরাঁওদের উৎপত্তি, ভূ-খন্ডে অধিকার প্রতিষ্ঠা, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক অগ্রগতি সকল প্রকার বৈষম্য ও নির্যাতন এর অবসান এবং ভিন্নতার উপর প্রতিষ্ঠিত ও বিশ্বাসী মতবাদ, নিজস্ব নীতিমালা,আচরণ, জ্ঞান, প্রথাগত নীতি উন্নয়ন এবং রাষ্ট্রে যথাযথ মর্যাদার ব্যবস্থা, সংস্কৃতি প্রদর্শনের চর্চা, সংরক্ষণ, সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তি, সাহিত্য, নিয়ন্ত্রণ, রক্ষা, অাত্মপরিচয় যথাযথ মর্যাদা আদায় করার নিমিত্তে এবং জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক মহলে এদেশের ওরাঁও জনগোষ্ঠীর অবস্থান তুলে ধরা ও সুসম্পর্ক তৈরির লক্ষ্যে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

আমরা স্বাধীন রাষ্ট্রে আমাদের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতঃ রাষ্ট্রের বৈষম্য থেকে মুক্তিলাভ করার প্রয়াস করি।সকলের সদৃচ্ছা থাকলে আশা করি তা সম্ভব। রাষ্ট্রের বিভিন্ন মতভেদ আমাদের উন্নয়নের কাটা হয়ে দাড়িয়েছে। সরকারকে ভুল তথ্য দিয়ে বারবার বিভ্রান্তের মধ্যে ফেলা হচ্ছে।আমরা অাশাবাদী সরকার আমাদের এই যন্ত্রণা থেকে অবসানের পথ অবশ্যই খুজবে এই প্রত্যশায়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে