চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্যভর্তি ১৪টি কন্টেইনার খালাস নেয়ার ঘটনায় চরম অনিয়ম-জালিয়াতি হয়েছে। আর এই কাজে জড়িত ৭ ব্যক্তি। যাদের ৫ জনই কাস্টমস ও বন্দরের কর্মকর্তা। বহুল আলোচিত কন্টেইনার পাচারের ঘটনা তদন্তে কাস্টমস গঠিত কমিটির প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, বিপুল রাজস্ব ফাঁকি দিতেই এই অনিয়মের আশ্রয় নেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে প্রতিবেদনটি জমা দেয়া হয়। এতে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
গেল বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ জানতে পারে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে নিলামের ১৪টি কন্টেইনার। পরে নগরীর পাহাড়তলী ময়নামতি মেরিন ইয়ার্ড নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে উদ্ধার করা হয় সেগুলো। এ ঘটনায় একই বছরের ২৬ অক্টোবর কাস্টমসের তৎকালীন অতিরিক্ত কমিশনার মুহাম্মদ মুবিনুল কবিরকে প্রধান করে ৪ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ। প্রায় ৬ মাস পর মঙ্গলবার প্রতিবেদন জমা দেয় এই কমিটি। যাতে উঠে এসেছে অনিয়ম-জালিয়াতির নানা চিত্র। নথিপত্রে ঘষামাজা, স্বাক্ষর জাল, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই না হওয়া, গেইট পাশ ইস্যুতে অসঙ্গতি এবং প্রায় ৭০ লাখ ৪৮ হাজার টাকা রাজস্ব পরিশোধের বিষয়টি খতিয়ে না দেখাসহ বেশ কিছু অনিয়ম ধরা পড়েছে তদন্তে।
তদন্ত কর্মকর্তারা দরদাতা প্রতিষ্ঠান আল-আমিন ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারি সাইফুল হায়দার চৌধুরী ও খলিলুর রহমানকে মূল অপরাধী হিসেবে সনাক্ত করে। পাশাপাশি কন্টেইনারগুলো খালাসে বন্দর-কাস্টমসের ৫ কর্মকর্তার যোগসাজস এবং গাফিলতির প্রমাণ পায়। যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।
২০১৩ সালের শেষদিকে নিলাম হয় গ্লিসারিন ভর্তি এই ১৪টি কন্টেইনারের। তবে, এরপর ২ বছর কেন সেগুলো খালাস নেয়া হয়নি তা উদঘাটন করতে পারেনি তদন্ত কমিটি।