গোপালপুরে উগ্রপন্থিদের হাতে খুনের ঘটনায় দুটি মামলা, সাংবাদিকসহ আটক চারজন টাঙ্গাইলের গোপালপুরে উগ্রপন্থিদের হাতে খুন হওয়া নিখিল জোয়ারদারের দোকানের শাটারে ঘাতকরা রাতের আঁধারে নীল কালিতে লিখে রেখেছিল ‘আদালত তোমাকে জামিন দিলেও আমরা তোমাকে জামিন দেবোনা’। এ বিষয়টি নিখিলকে ভয়তাড়িত করে এবং নিজের গতিবিধি সীমিত করে ফেলেন। দু’একজন পড়শিকে তিনি বিষয়টি অবহিত করেন। কিন্তু ভয়ে থানা পুলিশের স্মরণাপন্ন হননি বলে জানান নিহত নিখিলের পরিবারের সদস্যরা।
উগ্রপন্থিদের হাতে খুনের ঘটনায় ডিবি পুলিশ গত শনিবার গভীর রাতে এক সাংবাদিকসহ তিনজনকে আটক করেছে। এরা হলো দৈনিক ইনকিলাবের স্থানীয় সংবাদদাতা এবং আলমনগর মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম মারুফি, উপজেলা জামায়াতের সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বাদশা, বিএনপিকর্মী বীরনলহরা গ্রামের মৃত আব্দুর রশীদের পুত্র ঝন্টু মিয়া এবং ভূয়াপুর উপজেলার বীরহাটি গ্রামের আশিক। আশিককে পুলিশের স্টিকারযুক্ত একটি নম্বরবিহীন মোটর সাইকেলসহ আটক করে। ঘটনার ব্যাপারে দুটি মামলা হয়েছে। একটির বাদি নিহত নিখিলের স্ত্রী আরতি জোয়ারদার। এ মামলায় অজ্ঞাত তিনজনকে আসামী করা হয়েছে। অপর মামলার বাদি হলেন গোপালপুর থানার এসআই মোকছেদুল আলম। এটি বিস্ফোরণদ্রব্য বহন ও প্রয়োগ সংক্রান্ত মামলা। উভয় মামলা ডিবি তদন্ত করছে বলে জানান গোপালপুর থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল জলিল।
এদিকে ময়না তদন্ত শেষে আজ রবিবার দুপুরে নিজ গ্রামের শ্মশানে দাহ করা হয়। সকাল দশটায় নিহত নিখিলের বাড়িতে এসে শোকাগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের সাত্বনা দেন কৃষক শ্রমিক জনতালীগের প্রধান বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী। তিনি এসময়ে মিডিয়া কর্মীদের তিনি বলেন, দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও অরাজকতার দরুন এধরনের খুনখারাপি হচ্ছে। তিনি সরকারের নিকট নিখিল হত্যাসহ উগ্রপন্থিদের হাতে সাম্প্রতিক ঘটনার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানান। গোপালপুর থানার ওসি আব্দুল জলিল জানান, তিনটি বিষয়কে মাথায় নিয়ে পুলিশ কাজ করছে। প্রথম উগ্রপন্থি, দ্বিতীয়ত পারিবারিক বিরোধ এবং তৃতীয়ত প্রভাবশালীদের দ্বারা জমিজেরাত দখল করার ষড়যন্ত্র। এদিকে গত শনিবারের উগ্রপন্থিতের হাতে একজন নিহত হওয়ার ঘটনায় উপজেলা পরিষদ আজ রবিবার দুপুরে বিশেষ আইনশৃঙ্খলা কমিটির জরুরী মিটিং আহবান করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসূমুর রহমান। বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান ইউনুস ইসলাম তালুকদার, আওয়ামীলীগ সভাপতি হালিমজ্জামান তালুকদার, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান, পৌর মেয়র রকিবুল হক ছানা, উপজেলা পরিষদের ভাইসচেয়ারম্যান আব্দুল লতিফসহ স্থানীয় সূশিলসমাজের প্রতিনিধিরা।