তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের জয়জয়কার। এ ধাপে শনিবার দেশের ৪৮ জেলার ৬১৪টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোট গ্রহণ হয়।

শনিবার ভোটগ্রহণের শুরুতে সকালে ভোটারদের মধ্যে আগ্রহ দেখা গেলেও সময় গড়ানোর সঙ্গে তাতে ভাটা পড়ে। ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর সমর্থকরা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে জাল ভোট দিতে থাকে। এ সময় তারা কেন্দ্র দখল করে। অনেক জায়গায় বিরোধী এজেন্টদের বের করে দেন সরকারি দলীয় প্রার্থীর সমর্থকরা।

গাজীপুরের শ্রীপুরে বুথ দখল করে নৌকায় জাল ভোটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেখানে ক্ষমতাসীনরা এমন দাপট দেখিয়েছে যে, ভয়ে পোলিং এজেন্টদের নিয়ে প্রিসাইডিং অফিসার অন্য কক্ষে বসেছিলেন। শনিবার সকালে শ্রীপুর উপজেলার ইজ্জতপুর উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। সেখানে প্রায় ২০ মিনিট ধরে নৌকায় সিল মেরেছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকরা। পরে হঠাৎ করেই পুলিশ-বিজিবি এসে লাঠিচার্জ শুরু করে।

শ্রীপুরের ঘটনায় স্থানীয় ভোটাররা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তারা পুলিশ-বিজিবিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “এহন বাইরাই লাভ কি? যা করার তো কইরাই ফেলছে।” খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে ওই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার আবুল কালাম আজাদ যুগান্তরকে বলেন, “আমরা নিরুপায়। পরিস্থিতি এমন হয়েছিল যে, ভয়ে পোলিং এজেন্টদের নিয়ে আমি অন্য একটি কক্ষে বসে থাকতে বাধ্য হয়েছি।”

সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে ভোটকেন্দ্রে জাল ভোটের ছবি তুলতে গিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকদের মারপিটে তিন সাংবাদিক আহত হয়েছেন।

কুমিল্লার বুড়িচংয়ে কেন্দ্র দখল নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ৫ জন আহত হয়েছেন। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রাজাপুর ইউনিয়নের লাল মিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে  এ ঘটনা ঘটে।

ভোটারদের তাদের অভিযোগ, তাদের ভোট আগেই দেয়া হয়ে গেছে। গণমাধ্যমের খবরে বিভিন্ন প্রার্থীর কর্মীদের ভোটকেন্দ্রের ভেতরে ব্যালট পেপারে অবাধে সিল মারতেও দেখা গেছে।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, বেশ কিছু এলাকায় অনিয়মের তথ্য কমিশনে এসেছে। দৃশ্যমান গোলযোগ-সহিংসতা না হলেও দখল-অনিয়ম বহাল রয়েছে।

উল্লেখ্য, তৃতীয় দফায় দেশের ৪৮টি জেলার ৮৭টি উপজেলার ৬১৪ ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের দুটি ইউপিতে চেয়ারম্যান, সংরক্ষিত নারী সদস্য ও সাধারণ সদস্য সব পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় ওই দুই ইউপিতে ভোট হবে না। বাকি ইউপিতে দুই হাজার ৬৭২ প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ১৪টি রাজনৈতিক দলের মনোনয়নে এক  হাজার ৪৮৭ জন ও স্বতন্ত্রভাবে এক হাজার ১৮৫ জন প্রার্থী হয়েছেন।

তৃতীয় দফায় ২৫ ইউপিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। ৭৬ ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে বিএনপির কোনো প্রার্থী নেই।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে